বর্ষাকালে যেসব কারণে বাড়ে ত্বকের নানা রোগ
মানবদেহের ত্বক খুব সংবেদনশীল। একটু অযত্ন বা অবহেলায় তৈরি করতে পারে নানা জটিল সমস্যা। বিশেষ করে বর্ষাকালে ত্বক আরও বেশি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে। সাধারণত বর্ষাভেজা ও আর্দ্র পরিবেশে খুব সহজে ফাঙ্গাস বা ছত্রাক বেড়ে ওঠে। ফলে এ সময় ত্বকে ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হয়। উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয় মারাত্মক চুলকানি। এ ফাঙ্গাসটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে দেখা দিয়ে থাকে। আক্রান্ত অঙ্গভেদে এগুলো বিভিন্ন নামেও পরিচিত। যেমন অ্যাথলেট ফুট, জোকস ইচ, রিংওয়ার্ম (দাদ)। বর্ষাকালে গামবুট ও আরামদায়ক। পরলে কোনো সমস্যা হয় না। তবে বন্ধ প্লাস্টিকের জুতা ব্যবহার থেকে বিরত থাকা ভালো, বিশেষ করে যদি পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঙ্গাসের সংক্রমণ থাকে বা আগে এ ধরনের সংক্রমণের ইতিহাস থাকে। তাই এই সময়ে খোলা স্যান্ডেল বা স্যান্ডেলের জুতা ব্যবহার করা খুবই ভালো। যদি জুতা পরতেই হয়, তবে চামড়ার জুতা ও সুতি মোজা ব্যবহার কর যেতে পারে।
বর্ষাকালে প্লাস্টিকের স্যান্ডেল ব্যাপার করার রয়েছে নানা রকম সুবিধা। এই স্যান্ডেল বা জুতা ব্যবহারের বড় সুবিধা হলো এগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা যায়। বৃষ্টিভেজা পথ মাড়িয়ে ঘরে ফেরার পর পা ও স্যান্ডেল উভয়ই ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নেওয়া উচিত।
করণীয় : ছত্রাক সংক্রমণ হলে চুলকাবে। কিন্তু চুলকানো যাবে না। চুলকালে ত্বকে আরেক ধরনের ইনফেকশন দেখা দেবে। ত্বকের ছত্রাক-সংক্রমিত স্থানে প্রাথমিক অবস্থায় অ্যান্টিফাঙ্গাল মলম (ইকোনেট/ফানজিডাল/নিওস্টেন/ পেভারিন ইত্যাদি) লাগাতে পারেন। চুলকানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অ্যান্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন (এলভি/ফেক্সো, এলাট্রল/ওরাডিন ইত্যাদি)। খালি পায়ে বাইরে বের হবেন না। আবার নিরূপায় না হলে পানিও মাড়ানো উচিত নয়। নোংরা ও জীবাণুযুক্ত পানি পায়ের সংস্পর্শে এলে ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। বর্ষার সময় বাইরে থেকে ফিরে সাবান দিয়ে পানিসহ দু-তিনবার পা ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। হাঁড়ি-পাতিল পরিষ্কার করার পর হাত ভালোভাবে মুছে ফেলবেন। তোয়ালে, ব্রাশ, চিরুনি সবকিছু পরিষ্কার ও শুকনো রাখতে হবে। অন্যের ব্যবহৃত তোয়ালে, ব্রাশ, চিরুনি ব্যবহার করবেন না। টাইট অন্তর্বাস পরা থেকে বিরত থাকা উচিত। এসব পোশাক শতভাগ সুতি হওয়া উচিত। আবার একবার ব্যবহার করা স্যাঁতসেঁতে পোশাক না ধুয়ে পরিধান করা উচিত নয়। কাপড়চোপড় ধুয়ে পুরোপুরি শুকানোর পর পরতে হবে।
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
মনে রাখা দরকার, ছত্রাক একজন থেকে আরেকজনে ছড়াতে পারে। তাই একসঙ্গে বসবাসকারীদের কেউ আক্রান্ত হলে অন্যরা আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকবেন। বর্ষাকালে ছত্রাক সংক্রমণ বেশি হতে দেখা যায়। কিন্তু এটি প্রতিরোধ করা যায়। একটু সতর্ক থাকলেই এ সময় ছত্রাক সংক্রমণ থেকে ত্বক রক্ষা করা যায়।
লেখক : সিনিয়র চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
গ্রিন লাইফ হাসপাতাল (চতুর্থ তলা), রুম নম্বর-৪৩২
গ্রিনরোড, ঢাকা। ০১৯১১৪০৪২৭৫; ০১৭১৫৬১৬২০০
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?