মীরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
৩০ জুন ২০২৫, ১৭:০০
শেয়ার :
মীরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আজিজুর রহমান চৌধুরী ও বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মঈন উদ্দিন লিটনসহ ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

গতকাল রবিবার রাত ৯টার দিকে বারইয়ারহাট পৌর সদরের কাশবন রেস্টুরেন্ট সংলগ্ন জোবেদা ফার্মেসির সামনে এই ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় আজিজুর রহমানের অনুসারী মাওলা (৫০) ও কাশেম মাহফুজকে (৪২) রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আমিন এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রাতেই জোরারগঞ্জ থানায় বিক্ষোভ করে আজিজুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে তাদের অনুসারীরা। পরে ৩০ জন এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাত আরো ৫০/৬০ জনকে আসামি করে মামলা করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক পৌরসভার আহ্বায়ক মাঈনুল ইসলাম রাহাত।

সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় নুরুল আমিন চেয়ারম্যান গ্রুপের আহতরা হলেন- ছাত্র দলের তানবীর হোসেন নিশাত, শাহীন আলম নিশাত, স্বেচ্ছাসেবক দলের শাফায়েত হোসেন শুভ, মো. বাদশা, বারইয়ারহাট পৌরসভা ছাত্রদলর যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাহিদুল ইসলাম।

আহত মীরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আজিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল রবিবার রাতে বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মঈন উদ্দিন লিটনসহ আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে কাশবন রেস্টুরেন্টে নাস্তা খেতে যাই। সেখান থেকে বের হলে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া সন্ত্রাসীরা আমাদের টার্গেট করে হামলা চালায়। এসময় আমাকে উদ্ধারের জন্য মানবঢাল হিসেবে ঘিরে ধরলে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক পৌরসভার আহ্বায়ক কাশেম মাহফুজ, মাওলা ও রাহাত গুরুতর আহত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান অনুসারীরা মূলত আমাদের উপর এই ন্যাক্কারজনক হামলা চালায়। আমাদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাদের নোংরা হামলায় আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তারা আমাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো। পুলিশকে ফোন দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। পরে হামলার ঘটনা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা দলে দলে এসে থানায় জড়ো হয়। আমরা মামলা করেছি। আসামীদের এখনো গ্রেফতার করা হয়নি।’

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের রাজনৈতিক অনুসারী মীরসরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব গাজী নিজাম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি কোনো রাজনৈতিক পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা নয়। কাশবন হোটেলের সামনে আমাদের ছাত্রদল যুবদলের কয়েকজন নেতাকর্মীকে দেখে আজিজুর রহমান চৌধুরী, মাঈন উদ্দিন লিটনসহ তাদের অনুসারীরা কটূক্তি করে। এক পর্যায়ে সেটি বাকবিতন্ডা থেকে সংঘর্ষে রুপ নেয়। তারাই প্রথমে হামলা করে। বারইয়ারহাট পৌরসভা বড় বাজার। সব সময় আমাদের শতশত নেতাকর্মী বাজারে থাকে। পরবর্তীতে ঘটনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তাদের হামলায় আমাদের বেশ কয়েকজন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তারাও মামলা করবে। এ ঘটনায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, দিদারুল আলম মিয়াজি এবং আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। মূলত দিদারুল আলম মিয়াজি ডাক্তার দেখানোর জন্য ফেনী ছিলো, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান ও চট্রগ্রাম ছিলেন।’

মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (মস্তান নগর) হাসপাতালে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. সালাউদ্দিন  রাতে জানিয়েছেন, হামলায় আহত হওয়া ৪ জনকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। মাওলা নামে একজন গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) আব্দুল হালিম হামলার বলেন, ‘এটা মনে হয় তাদের দলীয় কোন্দল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রাতে বিএনপির এক পক্ষের নেতাকর্মীরা থানায় আসে। মাঈনুল ইসলাম রাহাত বাদি হয়ে ৩০ জন এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাত ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমরা মামলা নিয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।’