জাবি ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে রাবি শিক্ষার্থী আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পূর্বপরিচিত এক বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে এসে হেনস্তার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে সোহেল রানা। আজ রবিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত সোহেল রানা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার মো. হানিফ মোড়লের ছেলে। বর্তমানে চাকরি খুঁজতে ঢাকার লালবাগে থাকেন।
সোহেলের বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৫২ ব্যাচের ছাত্রী সূবর্ণা খাতুন বলেন, ‘সোহেল রানা আমাকে দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ বিরক্ত করে আসছে। এ ব্যাপারে আমি আমার বাসায় জানানোর পর আমার বাবা তার পরিবারে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। পরে ছেলেটি কিছু গুন্ডা ভাড়া করে আমার বাবাকে মারধর পর্যন্ত করে। আমাকে অনেকভাবে হেনস্তা করে।’
তিন আরও বলেন, ‘আজকে ছেলেটি আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে। আমাকে জোরপূর্বক একা দেখা করতে বাধ্য করে। দূর থেকে আমাদের দেখে আমার বন্ধুরা আসলে ছেলেটি তাদের মারার হুমকি দেয়। এ অবস্থায় আমি ও আমার পরিবার কেউ নিরাপদ মনে করছি না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছি। যেন তিনি কিছু পদক্ষেপ নেন এবং আমাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেন।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাররাজ আহমেদ বলেন, ‘আমার বান্ধবীর সঙ্গে ওই ছেলেটি খারাপ আচরণ করলে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে সেখানে যাই। পরে ওই ছেলে আমাদের ভয় দেখান এবং হুমকি দেন। আমরা ক্যাম্পাসের বাইরে গেলে তিনি আমাদের মারবেন; এমনটিও বলেছেন।’
প্রত্যক্ষদর্শী একই বিভাগের কাজী নাহিদা আক্তার প্রমা জানান, ‘আমার বান্ধবীকে ছেলেটি দীর্ঘদিন ধরে হেনস্তা করে আসছে। সে ভয়ে কিছু বলতে পারে না। আজকে ছেলেটি ক্যাম্পাসে আসে এবং জোরপূর্বক দেখা করে হেনস্তা করে। আমরা এ ঘটনার কঠিন বিচার দাবি করছি। একইসঙ্গে আমার বান্ধবী ও তার পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার আবেদন জানাচ্ছি।’
তবে অভিযুক্ত সোহেল রানা বলেন, ‘আমি আজকে মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে আসি। আমরা পূর্বপরিচিত, আগে একই জায়গায় থাকতাম। আমাদের ফেসবুকে কথা হয়। আজকে আসার সময় আমি তাকে বলি দেখা করতে।’
একা দেখা করার জন্য হুমকি দিয়েছিলেনে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এটা এমনিই বলেছিলাম। কিন্তু তার বন্ধুরা এর জন্য এখন অভিযোগ করছে।’
কি হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজকে আমি সাড়ে নয়টায় ক্যাম্পাসে এসে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত আমার কিছু বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করি। পরে আমি ওই মেয়ের সঙ্গে শহীদ মিনারে দেখা করি। এক পর্যায়ে মেয়েটির বন্ধুরা এসে হেনস্তা করার অভিযোগে আমাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশেদুল আলম বলেন, ‘আমি জরুরি একটা মিটিংয়ে আছি। মিটিং শেষ হলেই অফিসে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো।’
সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ওই ছাত্রীর অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছি। এছাড়া ছেলেটিকে আটক করেছি। প্রক্টর স্যার আসলে অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত উভয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’