রিমান্ড শেষে সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল কারাগারে
তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইসতিয়াক আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ দিয়েছেন।
গত ২৬ জুন ঢাকার চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান কাজী হাবিবুল আওয়ালের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। ওই রিমান্ড শেষে আজ তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ইন্সপেক্টর সৈয়দ সাজেদুর রহমান কারাগারে আটক রাখার আবেদনে বলেন, আসামিকে আগের তদন্তকারী উপপরিদর্শক (এসআই) সামসুজ্জোহা সরকার গত ২৬ জুন ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা অবস্থায় পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার আদেশে মামলাটির তদন্তভার আমার ওপর ন্যাস্ত হয়। পিবিআইয়ের আদেশে আমি গতকাল মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার কাজী হাবিবুল আউয়াল বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।’
আবেদনে তিনি আরও জানান, দায়িত্ব পালনে তিনি সম্পূর্ণভাবে জনগণের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে সংবিধানের পরিপন্থী কাজ করেছেন। নির্বাচন সচিব ও নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মিলে তৎকালীন সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাসহ উল্লেখিত নির্বাচন কমিশনাররা পূর্ণ সহায়তা করে গত বছর ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারিখ ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া স্বত্ত্বেও কাজী হাবিবুল আওয়ালসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা ও নির্বাচন কমিশন ভবনে কর্মরত সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা মিলে প্রহসনের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন। এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও আওয়ামীলীগের পক্ষের ডামি স্বতন্ত্রপ্রার্থী দিয়ে এবং জাতীয় পার্টিকে কয়েকটি পদ দিয়ে প্রহসনের জাতীয় নির্বাচন পর্ব শেষ করেন।
পিবিআইয়ের কর্মকর্তা আরও জানান, এই নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের বিজয় ঘোষণার সময় ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা। তিনি আওয়ামীলীগ, আওয়ামীলীগ ডামি প্রার্থী কিছু সদস্য ও জাতীয় পার্টির কিছু সদস্যদের সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেন। আসামি সংবিধান লঙ্ঘন করে ও নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে যোগসাজশে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় বসান। কাজী হাবিবুল আউয়াল এই মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে মর্মে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আসামির জামিনে ঘোর বিরোধীতা করছি। উক্ত আসামিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে। তাই মামলাটি সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে জেল হাজতে আটক রাখার আবেদন করা হচ্ছে।’
আজ রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী এবং আসামি পক্ষে আইনজীবী শফিউল আলম শুনানি করেন।
আরও পড়ুন:
গণভবনে ডাক পেলেন আ. লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন