রাজনীতি করতে চাইলে চাকরি ছাড়ুন: শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষা উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
২৩ জুন ২০২৫, ২১:৫৮
শেয়ার :
রাজনীতি করতে চাইলে চাকরি ছাড়ুন: শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষা উপদেষ্টা

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক রাজনীতি করতে চাইলে তাকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। আজ সোমবার দুপুরে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত একাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘কেউ যদি মনে করেন আমি রাজনীতি করব, অবশ্যই আপনি রাজনীতির অঙ্গনে চলে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে দিন। কারণ, রাজনীতিতে যোগ্য লোকের দরকার আছে। সেখানে আপনি সম্মান পাবেন। কিন্তু পঙ্কিল রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আনবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত দিনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগ হতো না। সেখানে ভোটার নিয়োগ হতো। এ ধরনের বাস্তবতা আমরা পার হয়ে এসেছি। আমাদের সবকিছুকে ঢেলে সাজাতে হবে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’

একশ্রেণির শিক্ষকের পাঠদানের নিষ্ঠা নিয়েও উপদেষ্টা প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, যেখানে ৩০-৪০টা ক্লাস নেওয়ার কথা, সেখানে আমাদের বন্ধু শিক্ষকেরা ৪-৫টা ক্লাস নিতেন। দেরি করে ক্লাসে ঢুকে সময়ের আগে বেরিয়ে আসতেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুম প্রথা এবং নানা অব্যবস্থার কথা বলতে গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যে গণরুম বছরের পর বছর থেকেছে, তা নিয়ে শিক্ষক হিসেবে আমরা কিছুই করতে পারিনি। এর প্রতিবাদ পর্যন্ত আমরা করতে পারিনি। সেই ধরনের বাস্তবতার মধ্যে আমরা ছিলাম। সকালে যখন ক্লাসে ছাত্ররা আসত, তখন অনেককে দেখতাম ঝিমিয়ে পড়তে। জানতে চাইলে বলত, বড় ভাইয়েরা তাদের প্যারেড করতে বলেছে।’

শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সমতাভিত্তিক সমাজ তৈরির। কিন্তু যে রাষ্ট্র আমরা পেলাম, সে রাষ্ট্রে সমতাভিত্তিক সমাজ হয়নি। আমরা নাগরিক ছিলাম। কিন্তু নাগরিক থেকে বানানো হয়েছে অধিকারহীন প্রজায়। কোনো অধিকার আমাদের ছিল না।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ ইসমাইল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হায়দার আলী, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ।