বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, ৬ দিন পর গুলিবিদ্ধ ছাত্রদলকর্মীর মৃত্যু

নরসিংদী প্রতিনিধি
২১ জুন ২০২৫, ১৮:৪৫
শেয়ার :
বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, ৬ দিন পর গুলিবিদ্ধ ছাত্রদলকর্মীর মৃত্যু

নরসিংদীর পলাশে ছাত্রদল-বিএনপির সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ছাত্রদলকর্মী ঈসমাইল হোসেন (২৬) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ দিন পর মারা গেছেন। গতকাল শনিবার বেলা ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

ঈসমাইল হোসেন পলাশ থানার ঘোড়াশাল পৌরসভার খানেপুর মহল্লার আব্দুর রহিম ভূঁইয়ার ছেলে ও পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের কর্মী হিসেবে পরিচিত। এর আগে গত ১৫ জুন পলাশ উপজেলার বিএডিসির মুড়ে ছাত্রদল এবং বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন ইসমাইল হোসেন। 

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নিহত ঈসসাইলের বাবা আব্দুর রহিম ভূঁইয়া জানান, গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইসমাইল মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে একই দিন রাতেই নরসিংদীর পলাশে নিজ এলাকায় তারা নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

ছেলে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান তিনি।

এর আগে গত ১৫ জুন সন্ধ্যায় ঘোড়াশাল পৌরসভার পলাশ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিএডিসির মোড়ে পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান পাপন ও জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের শোডাউনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে ইসমাইলও ছিলেন। তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার ৬ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইসমাইল মারা যায়।

এ ঘটনায় গত রবিবার রাতেই ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সিয়াম মিয়া বাদী হয়ে জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর কবির জুয়েলকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করে পলাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে জুয়েলের পক্ষ থেকে আলম মোল্লাসহ বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ্য করে পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বিএনপি নেতা জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন সোহেল বলেন, ‘নিহত ইসমাইল হোসেন ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন। বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েল ও তার লোকজনের ছোড়া গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫ জুন ছাত্রদলের পক্ষে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করা হলে প্রতিপক্ষ জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা ও গুলিবর্ষণ করে। এতে ইসমাইলসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে তার মরদেহ নরসিংদীতে আনা হয়।’