গর্ভবতীরা ঈদে বাড়ি যাওয়ার পথে যেসব নিয়ম মেনে চলবেন
গর্ভাবস্থায় অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ করা উচিত নয়। কারণ গর্ভাবস্থায় ভ্রমণ সবসময় নিরাপদ নাও হতে পারে। ঈদের সময় যানবাহনে অতিরিক্ত মানুষের চাপ থাকে। তাই গর্ভবতী মা ভ্রমণের সময় যেসব বিষয়ের দিকে পরিপূর্ণ খেয়াল রাখবেন তা হলো-
নিরাপদ ভ্রমণের সময়কাল : গর্ভাবস্থায় ১৪ সপ্তাহ থেকে ২৮ সপ্তাহ পর্যন্ত ভ্রমণ সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। প্রথম ১৩ সপ্তাহ পর্যন্ত রোগীর মাথা ঘোরানো, বমিভাব বা বমি বেশি থাকে, ভ্রমণকালে যা আরও বেশি হতে পারে আর এতে গর্ভবতী মা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এ সময় সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ারও ঝুঁকি বেশি থাকে। ২৮ সপ্তাহের পর ভ্রমণ করলে জটিলতা হতে পারে। যেমন- ব্যথা উঠে সময়ের আগে ডেলিভারি হওয়া, রক্তক্ষরণ হওয়া, পানি ভেঙে যাওয়া ইত্যাদি।
যে পথে ভ্রমণ নিরাপদ : তুলনামূলক বড় যানবাহন, যেমন- ট্রেন, লঞ্চ, বড় বাস ভ্রমণের জন্য নিরাপদ। অটোরিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ইত্যাদি ব্যবহার এ সময় নিরাপদ নয়। এগুলোয় ঝাঁকি বেশি লাগে। আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে আকাশপথে ভ্রমণ করতে পারেন।
আকাশপথে ভ্রমণের সময় যা করবেন : ভ্রমণের আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখুন। কিছু এয়ার লাইন্স ২৮ সপ্তাহের পর ভ্রমণের অনুমতি দেয় না। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। প্রতি ৩০-৪০ মিনিট পর পর কিছু সময় হাঁটুন। ৪ ঘণ্টার বেশি সময় ভ্রমণ করলে (ডিভিটি/ থ্রমবোসিস) রক্ত জমাট বেঁধে জটিলতা দেখা দিতে পারে। এ সময় টাইট মোজা (ঈড়সঢ়ৎবংংরড়হ ঝঃড়পশরহমং) পরে নিতে পারেন। আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে অনুমতিপত্র সংগ্রহ করুন। আপনার প্রেসক্রিপশনের কপি সঙ্গে রাখুন।
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
পরামর্শ : আরামদায়ক ঢিলেঢালা পোশাক পরবেন। ফিটিং জুতাও আরামদায়ক হতে হবে। ৩০-৪০ মিনিট পর পর উঠে দাঁড়াতে হবে এবং হাঁটতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। কিছু জরুরি ওষুধ ও প্রেসক্রিপশন সঙ্গে রাখতে হবে। গন্তব্যস্থলের চিকিৎসা-সুবিধা, যোগাযোগ ব্যবস্থা খেয়াল করতে হবে। আসনটি (সিট) সুবিধাজনক স্থানে নেবেন, যেন পা সোজা করার জন্য সামনে জায়গা থাকে। অন্যের অসুবিধা না করে নির্দিষ্ট সময় পরে উঠে দাঁড়াতে বা হাঁটতে পারেন। অনেক সময় গন্তব্যে পৌঁছাতে নির্ধারিত সময় থেকে অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে। তাই প্রয়োজনীয়, পানীয়, শুকনো খাবার, ওষুধ সঙ্গে রাখুন। আপনার আনন্দযাত্রা আরও সুন্দর হোক। নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে সুস্থভাবে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করুনÑ এ প্রত্যাশা রইল। ঈদ মোবারক।
লেখক : স্ত্রীরোগ, প্রসূতিবিদ্যা ও বন্ধ্যত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ এবং সার্জন
সহযোগী অধ্যাপক, বিআইএইচএস জেনারেল হাসপাতাল
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
চেম্বার : আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর-৬, ঢাকা
হটলাইন: ১০৬৭২
আরও পড়ুন:
শীতের রোগ-বালাইয়ের ব্যাপারে সচেতন হোন