মহিষ চুরির অপবাদ, গণপিটুনিতে প্রাণ গেল আনোয়ার
গাজীপুরের শ্রীপুরে মহিষ চুরির অপবাদে আনোয়ার হোসেন (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাড়িতে আহত অবস্থায় তিনি মারা যান। আজ শুক্রবার সকালে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের পোষাইদ গ্রামের খাসপাড়া এলাকায়। নিহত আনোয়ার হোসেন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন একই গ্রামের মো. কাজল, মো. কবির, মো. আক্রাম ও মো. শাহীন।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ার হোসেন কাজলকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ দেন। চুক্তি অনুযায়ী সুদসহ টাকা পরিশোধ না করায় আনোয়ার বারবার টাকার জন্য চাপ দিলে কাজল উল্টো হুমকি দিতে থাকেন। থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার না পেয়ে, গত ১৭ মে সকাল ১০টার দিকে কাজলের একটি মহিষের বাছুর নিয়ে থানায় যাচ্ছিলেন আনোয়ার। এ সময় খবর পেয়ে কাজল ও তার ভাই ও সহযোগীরা আনোয়ারকে আটক করে মহিষ চুরির অপবাদ দিয়ে প্রকাশ্যে মারধর করেন। পরে তাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। স্বজনরা বিকেলে মুচলেকা দিয়ে আনোয়ারকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করলেও, হুমকির মুখে চিকিৎসা করাতে পারেনি তারা। অবশেষে গতকাল রাতে তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু
নিহতের ছেলে মাহবুব রহমান বলেন,‘আমার বাবা কাজলকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। সুদসহ টাকা না দিয়ে উল্টো হুমকি দিত কাজল। থানায় অভিযোগ দিয়েও কিছু হয়নি। পরে বাবা মহিষের বাছুর থানায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন কাজল ও তার সহযোগীরা বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করে। এমনকি কাজলের ছেলে শাহীন বাবার বুকের ওপর উঠে লাফায়।’
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে তাদের বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করাও সম্ভব হয়নি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারিক বলেন,‘নিহতের পরিবার দাবি করেছে, কয়েক দিন আগে আনোয়ার হোসেনকে মারধর করা হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’