সিভিল সার্ভিসকে জনগণমুখী ও ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে সংস্কারের জোর আহ্বান

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
০৬ মে ২০২৫, ০০:১২
শেয়ার :
সিভিল সার্ভিসকে জনগণমুখী ও ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে সংস্কারের জোর আহ্বান

দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে একটি আধুনিক ও ভবিষ্যতমুখী সিভিল সার্ভিস গঠনে জোরালো ও কৌশলগত সংস্কার প্রয়োজন, সোমবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের কর্মশালায় এমন মত দিয়েছেন বক্তারা। বক্তারা বলেন, জনগণমুখীতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা, এই তিনটি বিষয়কে ভিত্তি করেই গড়ে তুলতে হবে আধুনিক, কার্যকর ও ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত সিভিল সার্ভিস।

বাংলাদেশে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের অধীনে গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহায়তায় ০৫ মে ঢাকার একটি হোটেলে যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৫০ জন প্রতিনিধির অংশগ্রহণে কর্মশালায় সিভিল সার্ভিসের দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রসমূহ মূল্যায়ন ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কৌশল নির্ধারণে মতবিনিময় করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। সরকারি প্রশাসনসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কার কমিশন গঠনের মাধ্যমে আমরা একটি পেশাদার ও জনগণপ্রধান সিভিল সার্ভিস গড়ে তুলতে পারি। এর জন্য প্রয়োজন অর্থবহ, চাহিদাভিত্তিক সক্ষমতা অর্জন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ।’

ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সোনালি দয়ারত্নে বলেন, ‘শুধু দক্ষতা বাড়ালেই হবে না, সিভিল সার্ভিসকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে হলে চাই কৌশলগত দূরদৃষ্টি, ডিজিটাল দক্ষতা ও প্রমাণভিত্তিক নীতিনির্ধারণে সক্ষমতা। আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়, ধারাবাহিকভাবে শেখার সংস্কৃতি এবং দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় অগ্রাধিকারের সাথে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার সংযোগ খুবই জরুরি।’

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না বলেন, সমন্বিত সংস্কার প্রচেষ্টাই পারে টেকসই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে এবং সরকারি সেবাকে আরও কার্যকর করতে। তিনি বলেন, কর্মশালায় প্রাপ্ত সুপারিশসমূহ ভবিষ্যতের নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. রিজওয়ান খায়ের। তিনি বলেন, ‘কৌশলগত চিন্তা, ফলাফলনির্ভরতা ও সততা, এই গুণাবলিও আজকের সময়ে প্রযুক্তিগত দক্ষতার মতোই জরুরি। আমাদের প্রয়োজন বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল রূপান্তরকে আপন করে নেওয়া, এবং এমন একটি প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলা যা অনিশ্চিত ও জটিল বাস্তবতায়ও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।’

কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন GIU-এর মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আবদুল লতিফ এবং সমাপনী বক্তব্য দেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক।