মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে ঢাবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের টাইমলাইন ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঘোষণা অনুযায়ী চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের কার্যক্রম সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এমতাবস্থায় যেকোনো ধরনের মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষ জানায়, যদি কোনো ধরনের মব ভায়োলেন্সের ঘটনা ঘটে, তবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হন তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবক। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
এ ছাড়া একই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জয় বাংলা’ ফটক এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মী শামীম মোল্লাকে মারধর করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে রাতে চিকিৎসার জন্য সাভারের গণস্বাস্থ্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক শামীমকে মৃত ঘোষণা করেন।।
ওই দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটে যাওয়া মব ভায়োলেন্সের ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এই ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। সে সময় মব ভায়োলেন্সের ঘটনা বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান আমাদের সময়কে বলেন, মব ভায়োলেন্স কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। বাড়াবাড়ি করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। যেকোনো যৌক্তিক দাবি আমরা সবসময় গুরুত্ব দিয়ে শুনেছি। আমার দরজা সবসময় খোলা, যে কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে পারে। আমি সবার সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী।
তিনি আরও বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে ছাত্র-শিক্ষক সবাই একটা পরিবারের অংশ। আমরা কেউই কারও প্রতিপক্ষ নই, তাই আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য পথ সবসময় খোলা। আমি মনোযোগ দিয়ে শুনব কিছু গ্রহণ করব, কিছু হয়তো পারব না। যেটা সম্ভব নয়, সেটা স্পষ্ট করে জানাবো; আর যেটা সম্ভব, সেটা সবার সঙ্গে মিলে করব। এরপরও উত্তেজিত হওয়া, লাফালাফি করা, যখন-তখন জিন্দাবাদ-মুর্দাবাদ করা এসব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আচরণ। আমি সবার সঙ্গে মিলে কাজ করতে চাই এবং সব যৌক্তিক কথা শুনতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুরো জাতি আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। আমাদের কোনো একটি ভুল আচরণ হলে সেটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। একজনের আচরণ পুরো প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। তাই এসব বিষয়ে আমাদের আরও সতর্ক থাকা উচিত।