মে দিবসের অনুষ্ঠানে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আন্তর্জাতিক মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রার আগে ও পরে যাওয়াকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে শ্রমিক দল নেতাসহ অন্তত ৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল সরিষাবাড়ী উপজেলা শাখা ও সরিষাবাড়ী থানা ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স প্লাম্বার এসোসিয়েশনের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে এই ঘটনা ঘটে। এতে শ্রমিক নেতাসহ ৫ জন আহত এবং ৪টি মোটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা শ্রমিক দলের সদস্য ও কামরাবাদ ইউনিয়ন শ্রমিক দলের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক দুলাল মিয়া (৫৫) এবং শ্রমিক দল কর্মী রুবেল শেখকে (৩৫) সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শোভাযাত্রার নেতৃত্বদানকারী সূত্র জানায়, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানের যোগদানের উদ্দেশ্যে সরিষাবাড়ী থানা ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স প্লাম্বার এসোসিয়েশনের একটি মিছিল শিমলা বাজার বাসষ্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে পৌরসভার সামনে যেতে থাকে। এ সময় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল সরিষাবাড়ী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আলম তালুকদার ৬-৭টি মোটরসাইকেল নিয়ে ওই মিছিলটি দাড় করিয়ে তার নেতৃত্বাধীন মিছিলটি আগে নিয়ে যাওয়ার জন্য সুযোগ চান।
এ নিয়ে সরিষাবাড়ী থানা ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স প্লাম্বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ছাইফুল্লাহর সাথে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল সরিষাবাড়ী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আলম তালুকদারের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ছাইফুল্লাহকে মোর্শেদ আলম তালুকদার ধাক্কা দিলে অপর শ্রমিক দল নেতা দুলাল মিয়া মোর্শেদ আলমের পক্ষ নেন। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনার একপর্যায়ে ৪টি মোটরসাইকেল ভাংচুর ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এরপর সরিষাবাড়ী থানা ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স প্লাম্বার এসোসিয়েশনের শ্রমিকরা উপজেলা পরিষদে মিছিল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এ সময় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল সরিষাবাড়ী উপজেলা শ্রমিকরা সরিষাবাড়ী থানা ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স প্লাম্বার এসোসিয়েশনের শ্রমিক বরকউল্লার ওপর হামলা চালিয়ে মারধর শুরু হয়।
সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ ও জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। মারধরের ঘটনায় গুরুতর আহতদের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসাধীন শ্রমিক দল নেতা দুলাল মিয়া অভিযোগ করেন, উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ তালুকদারের সাথে কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে এ মারধরের ঘটনার সূত্রপাত হয়।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানা ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স প্লাম্বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ছাইফুল্লাহ বলেন, আমরা সবাই একই দলের। এ অপ্রিতিকর ঘটনা আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারনে হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ তালুকদার জানান, যমুনা সার কারখানা এলাকা থেকে একটা বহর নিয়ে গেলে কিছু লোক রাস্তায় সাইড দিচ্ছিলো না। এ নিয়ে ১ম দফায় তর্ক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ২য় দফায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে তারা শ্রমিক দলের নেতাদের মারধর করে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা ইতোপূর্বে আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত ছিল এবং নতুন করে বিএনপিতে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
আরও পড়ুন:
সাকিবকে নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া বলেন, এ ঘটনায় কোন পক্ষই অভিযোগ করেনি, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।