রুয়া নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান

রাবি প্রতিনিধি
০১ মে ২০২৫, ১৯:৫৪
শেয়ার :
রুয়া নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

এ সময় ‘সিলেকশন না ইলেকন, ইলেকশন ইলেকশন’, ‘একদফা এক দাবি, ১০ তারিখে রুয়া দিবি’, ‘রুয়া কি তোর বাপের রে, প্রশাসন জবাব দে’, ‘দিয়েছিতো রক্ত, আরও দেবো রক্ত’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে যায় আন্দোলনকারীরা।

তারা বলেন, ‘আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সুন্দরভাবে সাজানোর দায়িত্ব নিতে চাই। ১০ তারিখে রুয়ার নির্বাচন হওয়ার ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলতেই থাকবে।’

প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও রাজশাহী মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল এমাজউদ্দীন মন্ডল বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের বাসভবনে হামলা চালানো হয়েছে রুয়া নির্বাচন স্থগিত করার জন্য। এরচেয়ে ঘৃণ্য ও অনৈতিক কাজ আর কিছু হতে পারে না। আমাদের উপাচার্য নিজেও একসময় ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের রাজপথের নেতৃত্বে ছিলেন। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, তিনি কখনোই নতুন ফ্যাসিবাদের কবলে পড়বেন না, তাদের কোনো আবদার গ্রহণ করবেন না। কিন্তু আজ রুয়ার নির্বাচন স্থগিত করে তিনি আমাদের সেই বিশ্বাসকে ভেঙে দিয়েছেন। আমরা বিস্মিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের সাড়ে আট হাজার রুয়া লাইফ মেম্বার অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে নির্বাচন উৎসবের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু একটি সামান্য অজুহাতে সেই আনন্দ মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনারা মানুষের আবেগ, প্রত্যাশা ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে ছেলেখেলা করতে পারেন না। নির্বাচন ও ভোট আমাদের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। ১৭ বছর ধরে দেশে ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের সে অধিকার দেয়নি। জাতীয় নির্বাচন হয়নি, রাকসু নির্বাচন হয়নি, ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতি আমাদের সেই ১৭ বছরের দুঃশাসনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই—যদি ১০ মে’র মধ্যে রুয়ার নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা না আসে, তাহলে রুয়া অ্যাডহক কমিটিকে কীভাবে প্রতিহত করতে হয়, সে পদ্ধতিও আমরা জানি। এই আন্দোলন চলতেই থাকবে, যতক্ষণ না আমাদের বলা হয় ১০ তারিখেই রুয়ার নির্বাচন হবে।’

আরেক প্রাক্তন ছাত্র ও রাজশাহী মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. কেরামত আলী বলেন, ‘যারা রুয়ার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, তাদের কেন নির্বাচনের দায়িত্ব দিলেন? যে ভুল তারা করেছে, আমরা তা মেনে নিতে পারছি না। যেকোনো উপায়ে আপনারা নির্বাচন দিবেন। দরকার হলে সৎ সাহসধারী নতুন কমিশন গঠনের মাধ্যমে ও তাদের পিছু না হটার শপথ করিয়ে নির্বাচন দিবেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি পুরণের জন্য নির্বাচন দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোন কুচক্রি মহলের কাছে আপনি হাত মেলালেন আমি জানি না। নির্বাচন তারা করবে না, আপনার মাধ্যমে তারা নির্বাচন স্থগিত করল। এখানে দলমত নাই। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সুন্দরভাবে সাজানোর দায়িত্ব নিতে চাই।’

অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মী, রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ দুই শতাধিক প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছেন।