বদহজম বা ডায়রিয়া হলে যা করবেন
বদহজম ও ডায়রিয়া দুটি সাধারণ পরিপাকজনিত সমস্যা, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সময়ই দেখা যায়। বদহজম (ইনডাইজেশন) বলতে বুঝায় খাবার ঠিকমতো হজম না হওয়া। এর ফলে পেট ফাঁপা, অস্বস্তি, ঢেকুর বা বুক জ্বালাপোড়া দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে ডায়রিয়া হলো পাতলা ও বারবার মলত্যাগ, যা পানিশূন্যতা, দুর্বলতা এবং বিভিন্ন জটিলতার কারণ হতে পারে। এ দুটি সমস্যাই খাদ্যাভ্যাস, সংক্রমণ, দুশ্চিন্তা বা হজমজনিত অসামঞ্জস্যতার ফলে হতে পারে। সঠিক পরিচর্যা ও চিকিৎসার মাধ্যমে এসব সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এজন্য যা করতে হবে তা হলো- দিনের শুরুতেই হালকা খেয়ে নিতে হবে। সারাদিনে অল্প অল্প করে খাবার খেতে হবে, একেবারে পেট ভরে খাওয়া যাবে না। দুধ জাতীয় খাবার, কফি, গুরুপাক খাবারগুলো যতটুকু সম্ভব, এড়িয়ে চলতে হবে। পানি এক বা দুই গ্লাস করে সারাদিনে ১০ থেকে ১২ গ্লাস (অসুস্থতার কারণে পানি খেতে বারণ না থাকলে) পান করে যেতে হবে। রিকশা বা গাড়ি ব্যবহার না করে একটু হাঁটার চেষ্টা করতে হবে। খাবারের মাঝে সামান্য বিরতি দিয়ে খেতে হবে। এর পরও অনেক সময় আমরা নানা সমস্যায় ভুগে থাকি। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হলো বদহজম।
বদহজম বা গন্ধ ঢেকুর হলে হাতের কাছে Syp. Pink Bismol বা Syp. Peotocid রাখতে পারেন। চার থেকে ছয় চা চামচ আধা ঘণ্টা পর পর সমস্যা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খেতে হবে। তবে অবশ্যই সারাদিনে ৮ বারের বেশি খাওয়া যাবে না। আর এটা খেলে পায়খানা কালো হতে পারে, ভয় পাবেন না। আপনার নিয়মিত কোনো ওষুধ থাকলে সেটা খাবেন এই ওষুধ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে।
বমি ভাব বা বমি হলে Tab. Emistat জাতীয় বমির ওষুধ খেতে পারেন। প্রতিবার বমির জন্য দুই গ্লাস করে ওরস্যালাইন খাবার চেষ্টা করুন। আগে বমির ওষুধ খেতে হবে, এর আধা ঘণ্টা বা ৪০ মিনিট পরে ওরস্যালাইন খাওয়া শুরু করবেন। হালকা পেটব্যথা থাকলে Tab. Timozin জাতীয় অ্যান্টিস্পাসমোডিক ওষুধ কাজে লাগতে পারে।
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
পাতলা পায়খানা হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি জাতীয় খাবার খেলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে সুস্থ হয়ে যাবেন। অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই। প্রতিবার পাতলা পায়খানার জন্য দুই গ্লাস করে ওরস্যালাইন খাবেন। এ সময় সহজপাচ্য খাবার গুলো খাবার চেষ্টা করুন, যেমন জাউভাত, চিড়া, কলা ইত্যাদি। যারা ওরস্যালাইন খেতে পারেন না তারা ডাবের পানি, বাসার তৈরি লবণ চিনির শরবত, বাজারে কিছু স্পোর্টস ড্রিঙ্কস পাওয়া যায় সেগুলো কিংবা SMC প্লাস ইলেক্ট্রলাইট ড্রিঙ্কস খেতে পারেন।
তবে মনে রাখতে হবে, প্রতিবার পায়খানা বা বমির জন্য ৫০০ ml বা দুই গ্লাস খেতে হবে। খাবার পরে যাদের পেট ফুলে যাচ্ছে বা গ্যাস হচ্ছে মনে হচ্ছে তারা উপসর্গ হলেই Syp. Gavilac M,চার চামচ করে খেয়ে নেবেন। দিনে চারবার পর্যন্ত এটা খেতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে, এটা খেলে পাতলা পায়খানা হতে পারে। তীব্র পেটব্যথা, জ্বর, দুর্বলতা, পেট অত্যধিক ফুলে যাওয়া, শরীরব্যথা বা শরীরে লবণের ঘাটতি দেখা দিলে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
লেখক : হেপাটোলজি, মেডিসিন, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ও লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ এবং সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?
শ্যামলী শাখা (ইউনিট-২), ঢাকা। ০৯৬৬৬৭৮৭৮০৬