স্থানীয় সরকার নির্বাচন, নয়তো দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৮
শেয়ার :
স্থানীয় সরকার নির্বাচন, নয়তো দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণকে স্বস্তির মধ্যে আনতে হবে, নয়তো দ্রুত নির্বাচন দেন। সংস্কার ছাড়া আমরাও নির্বাচন চাই না। এই সরকারের প্রধান দুটি কাজ হলো সংস্কার ও গণহত্যার বিচার করা। আমাদের পরিষ্কার কথা, সংস্কার এবং বিচার দুটোই সমান্তরালে চলবে। 

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাচঁপুরে গণ পরিষদের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সহ-সভাপতি রতন হাজীর মৃত্যুতে সমবেদনা ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন। দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ওয়াহিদির রহমান মিল্কির সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মুখপাত্র ফারুক হাসান, নারায়নগঞ্জ ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মহিবুল্লাহ প্রমুখ। 

নুরু বলেন, ‘দুই বারের বেশি একটি লোক যদি প্রধানমন্ত্রী থাকে, তাহলে আমরা মনে করি শেখ হাসিনার মত ফ্যাসিষ্ট হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সকল ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু তে রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও মিলাদ মাহফিল আর কবর জিয়ারত ছাড়া কোনো কাজ করতে পারেন না। আমরা এখানে বলছি, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য দরকার। সংসদে যেন একক দলের অধিপত্য না থাকে। একক দল মাত্র দুই বা তিন শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে জনগণের রাষ্ট্রের ওপর যেন কোনো ব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে না পারে, সেই জন্য আমরা বলছি, ভারসাম্যপূর্ণ সংসদের জন্য আনুপাতিক হারে নির্বাচন কিংবা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টে আমরা যেতে পারি। এখন আমরা গনঅধিকার পরিষদের পক্ষে থেকে ২০২১ সালে জাতির কাছে তুলে ধরেছি। আমরা চাইলেই তো হবে না। এই কারণে বিষয়টি জাতীয় সংস্কার ঐক্যেমত কমিশনের কাছে জোর দিয়ে জানাছি। দুনিয়ায় কোনো বিষয়েই সব মানুষ একমত হয় না। শেষ পর্যন্ত বিচারের ভার দু’এক জনের কাছে থাকে। সংস্কার কমিশনের কাছে কিন্তু বিচারের ভার দেওয়া হয়ছে। এখন পর্যন্ত যে বিষয়গুলোতে ঐক্যেমত হয়েছে কিংবা আরও যেটা প্রয়োজন, সে বিষয়গুলো সংস্কারের লক্ষ্যে জাতীয় সনদ প্রণীত করা দরকার। যেখানে সকল রাজনৈতিক দলগুলো অংঙ্গীকার করবে যে, আমরা সংংস্কার কাজকে সমর্থন করছি। তার ভিত্তিতে সংস্কার কাজগুলো বাস্তবায়ন হবে। পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে। জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। এটাই আমাদের রাজনৈতিক দৃষ্টি ভঙ্গী বর্তমান সমাজ ও সরকারের প্রতি।’

ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা মনে করি ফ্যাসিবাদ কাঠামোর পরিবর্তন না করা গেলে যদি কিছু কাজের সংস্কার করা লাগে, তখন যদি রাষ্ট্রের কোনো কাজের সংস্কার না করা যায়, তাহলে আগের মত যেই লাউ সেই কদু সেভাবেই চলবে। এখন নির্বাচিত সরকার নাই জাতীয় ঐক্যমত্য তোমাদের ভিত্তিতে সকল রাজনীতিক দল মত নির্বিশেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে সম্প্রীতিক সময়ের জন্য। সে সরকার একটি সংস্কার কমিশন গঠন করে দিয়েছে। তারা বিভিন্ন সংস্কার কাঠামো তৈরি করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেছে। প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐক্য কমিশন দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ঐক্যমতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। আমরা বলছি, সকল দলকে নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে কিছু সংস্কার করা যেতে পারে। প্রশাসনের জন্য যদি কোনো বিধি-বিধান না তৈরি করা হয়, তাহলে সেই প্রশাসন তো আগের মতই কাজ করবে। আমরা পিসির শক্তি যদি বন্ধ করতে না পারি, আমরা যে নির্বাচনে প্রত্যাশা করছি, সেটা কিন্তু হবে না। বর্তমানে স্থানীয় সরকারের কোনো প্রতিনিধি নাই। জনগণ মারাত্মক ভোগান্তিতে আছেন। দ্রুত নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট একটি রোড ম্যাপ থাকা দরকার। তা না হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি সংশয় সন্দেহ তৈরি হয়, তাহলে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্তরায় তৈরি হবে।’