কক্সবাজারে কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্তকরণের মাধ্যমে ধরিত্রী দিবস উদযাপন করল ইউএনডিপি

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
২২ এপ্রিল ২০২৫, ২০:৫৮
শেয়ার :
কক্সবাজারে কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্তকরণের মাধ্যমে ধরিত্রী দিবস উদযাপন করল ইউএনডিপি

‘আমাদের শক্তি, আমাদের পৃথিবী”—এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এ বছরের সালের ধরিত্রী দিবস পালন করল জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং আরণ্যক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ইউএনডিপি কক্সবাজারে বঙ্গোপসাগরের ১১৬টি সামুদ্রিক কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্ত করেছে। গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ)-এর অর্থায়নে পরিচালিত জিইএফ স্মল গ্রান্টস প্রোগ্রামের আওতায় এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে।

ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার কচ্ছপের বাচ্চাগুলো অবমুক্ত করেন। এ সময়ে তিনি বলেন, ‘সমুদ্রে কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্ত করার অভিজ্ঞতা ছিল অন্যরকম । এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যখন আমরা প্রকৃতির যত্ন নেই, তখন প্রকৃতি আপন শক্তিতেই সুস্থ ও সুন্দর হয়ে ওঠে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি ছোট উদ্যোগ হলেও এর প্রভাব প্রকৃতিতে বিশাল এবং ইতিবাচক।’

বন বিভাগের সহকারী প্রধান সংরক্ষক এবং জিইএফ-এসজিপি ন্যাশনাল স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ড. মারিয়াম আক্তার বলেন,‘যত্রতত্র পর্যটন যেমন আমাদের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, তেমনি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য হুমকি স্বরূপ। এই বিষয়টি এখনই আমাদের জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এবং এসজিপি স্টিয়ারিং কমিটির আরেক সদস্য পাপিয়া সুলতানা বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমাদের সমাজের প্রতিটি অংশকে সম্পৃক্ত করতে হবে।’ তিনি একটি ‘জাতীয় জীববৈচিত্র্য তহবিল’ গঠনের প্রস্তাব করেন, যাতে আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই পরিবেশ সংরক্ষণ নিশ্চিত করা যায়।

ধরিত্রী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই সফরে প্রতিনিধি দল আরও দুটি স্থানীয়, কমিউনিটি-নির্ভর প্রকল্প ঘুরে দেখেন। উখিয়ার চাকমাপাড়া গ্রামে পালস বাংলাদেশ বাস্তবায়িত “কমিউনিটি-ভিত্তিক ইকোট্যুরিজম ও জলবায়ু সহনশীল কৃষি” প্রকল্পটি স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে টেকসই পর্যটন ও বিকল্প জীবিকা উন্নয়নে কাজ করছে। অন্যদিকে ইনানি সমুদ্র সৈকতের “ইকোসিস্টেম অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড রেস্টোরেশন থ্রু হারমনি (EARTH)” প্রকল্পটি তরুণ স্বেচ্ছাসেবী, হাতি ও কচ্ছপ প্রতিরক্ষা দল, এবং স্থানীয় টহল দলকে একত্রিত করে সামুদ্রিক ও বনজ পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে।

এই সফরে অংশগ্রহণ করেন কক্সবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম, ইউএনডিপি কক্সবাজার সাব-অফিসের প্রধান ভারডন হোচা, ইউএনডিপি প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট আরিফ ফয়সল, কক্সবাজার ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, পালস বাংলাদেশ এবং আরণ্যক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা। সবার মতেই, স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং দায়িত্বশীল পর্যটনের মাধ্যমে আমরা একদিকে যেমন প্রকৃতি সংরক্ষণ করতে পারি, তেমনি অন্যদিকে একটি টেকসই ভবিষ্যৎও গড়ে তুলতে পারি।