ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ২৪তম সমাবর্তন শুরু

অনলাইন ডেস্ক
১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:৪৪
শেয়ার :
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ২৪তম সমাবর্তন শুরু

আনন্দ ও গৌরবের আবহে শুরু হয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ২৪তম সমাবর্তন। আজ বুধবার সকাল ১১টায় রাজধানীর আফতাবনগরের খেলার মাঠে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার শিক্ষার্থীদের ডিগ্রী প্রদাণ করেন। এ সমাবর্তনে আন্ডার গ্রাজুয়েট ও গ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের ২ হাজার ৮৮৫ জন শিক্ষার্থীকে সনদ দেওয়া হয়। এ ছাড়া অনন্য মেধাবী ছয়জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় স্বর্ণ পদক।

শিক্ষা উপদেষ্টা তার বক্তব্যে তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘একদিকে নতুন প্রযুক্তি সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করছে। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী অসহিষ্ণুতা, উগ্রজাতীয়তাবাদ এবং সংকীর্ণতা বড় অর্জনের পথে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে নিজেদের মেধা, দক্ষতা ও শ্রম দিয়ে বিশ্বব্যাপী শান্তি, সহিষ্ণুতা, সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক পৃথিবী গড়ে তুলতে তরুণদের প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টা আহ্বান জানাই। ’

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ জানান, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এখন খবরদারির জায়গা থেকে সহযোগিতার জায়গাতে চলে এসেছে। সদ্য স্নাতক শিক্ষার্থীদের তিনি কর্মজীবনে পরিবারের প্রতি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের উপদেশ দেন।  

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা এপেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ থেকে ২৫ বা ৩০ বছরের পরের বাংলাদেশ কেমন হবে তা নির্ভর করছে তোমাদের ওপর। গ্রাজুয়েটদের তিনি চাকরির বদলে উদ্যোক্তা হবার আহ্বান জানাই। তবে কোন উদ্যোগ শুরু করার আগে একদম নিচের ধাপ থেকে কাজটা শিখে নিয়ে তারপর ব্যবসা আরম্ভ কর। অন্যথায় লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। ’

চীনের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘বড় প্রতিষ্ঠান করতে হবে এমন নয়, ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান গড়েও দেশের জিডিপি’তে বড় অবদান রাখা যায়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বাংলাদেশ উচ্চামানের শিক্ষা কমিশন গঠনের দাবী জানান। পাশাপাশি একটি আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক এবং উদ্ভাবনী শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে দাবী তুলে ধরেন।

শিক্ষার্থীদের তিনি বলেন, ‘দেশের সম্পদ যথাযথভাবে ব্যবহার করে পণ্য ও সেবা তৈরিতে মনোনিবেশ করতে হবে। ‘‘আমদানি প্রবণ বাংলাদেশ’’ তকমাটি ঘুচাতে হবে। ’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামস রহমান বলেন, ‘আমাদের জনশক্তিকে সম্পদে রুপান্তর করতে হলে আমাদের প্রযুক্তিগত এবং ভাষাগত দক্ষতা বাড়াতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রচলিত কাঠামোর বাইরে গিয়ে নিজেদের সৃজনশীলতা দিয়ে নতুন কিছু করতে উৎসাহ জানাই।’

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব,ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যগণ, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারপার্সন, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, গ্রাজুয়েট ও তাঁদের অভিভাবকরা অংশ নেন। শিক্ষা জীবনের শেষে যথাসময়ে সনদ হাতে পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।