জ্যাকব-নবী নেওয়াজ-মামুন-আবুল হাসান রিমান্ডে
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ভোলা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) নবী নেওয়াজ, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসানের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান এই রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডকৃত আসামিদের মধ্যে রাজধানীর ভাটারা থানাধীন নতুন বাজার এলাকায় হোটেল কর্মচারী রোহান হত্যাচেষ্টা মামলায় আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার সাব-ইন্সপেক্টর হাফিজুর রহমান সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
আর রাজধানীর রমনা এলাকায় গৃহকর্মী লিজা আক্তারকে গুলি করে হত্যা মামলায় ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) নবী নেওয়াজের (৫৯) পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। তদন্ত সংস্থা সিআইডি তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে শাওন তালুকদার নামে এক ব্যক্তি গুলিতে নিহতের মামলায় পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের তিন দিন এবং একই মামলায় যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসানের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন:
চীনা অ্যাপের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব মানুষ
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ি থানার সাব-ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসান তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।
শুনানিকালে সব আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।
জ্যাকবের পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদনে বলেন, ‘জ্যাকব ২০০৯ সাল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি আগেও রিমান্ডে ছিলেন। ৫ আগস্টের পর তার নির্বাচনী এলাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন প্রার্থনা করছি। পরে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।’
নবী নেওয়াজের পক্ষে তার আইনজীবী বলেন,‘তিনি সাত বছর আগে এমপি ছিলেন। আওয়ামী লীগের ভাইটাল পোস্টে ছিলেন না। তিনি একজন শিক্ষাবিদ। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। রিমান্ড নিলে টর্চার করে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হবে। তিনি অসুস্থ। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। বর্তমান বা অতীতে কোনো পোস্টে ছিলেন না।আওয়ামী লীগের ডিশিসন মেকারও না। ঢাকায় থাকেন না। থাকেন ঝিনাইদাহে। তার রিমান্ড বাতিলের প্রার্থনা করছি। পরে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।’
আরও পড়ুন:
ভারত সফরে গেলেন প্রধান বিচারপতি
গত ১১ এপ্রিল নবী নেওয়াজকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামুনের পক্ষে তার আইনজীবী বলেন, ‘তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। এর আগে ৮০/৮৫ দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়। প্রয়োজন মনে করলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।’
তখন ফারুক ফারুক ফারুকী বলেন, ‘দুই হাজার হত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যেকটি ঘটনায় মামলা হবে। অর্ধেক মামলাও হয়নি। বড় ধরনের আসামি। প্রত্যেক মামলায় তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।’
তবে আবুল হাসানের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত জানতে চান, আবুল হাসান কিছু বলবেন কি না। তখন আবুল হাসান বলেন, ‘না, স্যার কিছু বলব না।’
পরে আদালত চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের তিন দিন এবং আবুল হাসানের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।