উৎসবে বদহজমের সমস্যা এড়াতে যা করবেন
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম পালন শেষে শুরু হয়েছিল লম্বা ছুটি। অবশেষে শেষ হয়ে গিয়েছে সেই ছুটিও। এখন কর্মস্থলে ফেরার পালা। তবু আমরা অনেকেই বের হতে পারিনি ঈদের উৎসব থেকে। প্রায় প্রতিদিনই বিয়ে বা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে হচ্ছে। এছাড়াও দীর্ঘ এক মাস রোজা পালনের পর স্বভাবতই প্রত্যেকের ভালো-মন্দ কিছু খেতে ইচ্ছা করে। আর এ ইচ্ছেটাই কখনো কখনো কাল হয়ে দাঁড়ায় আমাদের শরীরের জন্য, পেটের জন্য। সিয়াম পালনকারী মুসলিমদের একটা বড় অংশই পরিবর্তন আসা সময়ে নানা রকম পেটের সমস্যায় ভুগে থাকেন। বদহজম, ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা কিংবা বমি, সঙ্গে কারও কারও গ্যাস্টিকের সমস্যার কারণে পেটের অস্বস্তিতে কষ্ট পান। সেসব কিছু সমস্যা থেকে মুক্তি এবং প্রতিরোধ নিয়ে আজকের আলোচনা। সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য যেসব নিয়ম মেনে চললে এই সময় ভালো থাকতে পারেন তা হলো- এ সময়ে অল্প-অল্প করে খাবার খান, একেবারে পেট ভরে খাবেন না। দুধ জাতীয় খাবার, কফি, গুরুপাক খাবারগুলো যতটুকু পারবেন, এড়িয়ে চলুন। পানি এক-দুই গ্লাস করে সারা দিনে ১০ থেকে ১২ গ্লাস (অসুস্থতার কারণে পানি পান করতে বারণ না থাকলে) পান করে যাবেন।
রিকশা বা গাড়ি ব্যবহার না করে একটু হাঁটার চেষ্টা করুন। খাবারের মাঝে একটু বিরতি দিন। এর পরও আমরা নানা সমস্যায় ভুগে থাকি। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে বদহজম।
বদহজম বা গন্ধ ঢেঁকুর হলে হাতের কাছে ঝুঢ়. চরহশ ইরংসড়ষ বা ঝুঢ়. চবঢ়ঃড়পরফ রাখতে পারেন। চার থেকে ছয় চা চামচ আধা ঘণ্টা পর-পর সমস্যা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খেতে হবে। তবে অবশ্যই সারা দিনে ৮ বারের বেশি নয়। এটি খেলে পায়খানা কালো হতে পারে। ভয় পাবেন না। আপনার নিয়মিত কোনো ওষুধ থাকলে সেটি খাবেন এ ওষুধ খাওয়ার দুঘণ্টা পর। ববি-ভাব বা বমি হলে ঞধন. ঊসরংঃধঃ জাতীয় বমির ওষুধ খেতে পারেন। প্রতিবার বমির জন্য দুগ্লাস করে ওরস্যালাইন খাবার চেষ্টা করুন। আগে বমির ওষুধ খেতে হবে, এর আধা ঘণ্টা বা ৪০ মিনিট পরে ওরস্যালাইন খাওয়া শুরু করবেন। হালকা পেটব্যথা থাকলে ঞধন. ঞরসড়ুরহ জাতীয় এন্টিস্পাসমোডিক ওষুধ কাজে লাগতে পারে। পাতলা পায়খানা হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি জাতীয় খাবার খেলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে সুস্থ হয়ে যাবেন। এন্টিবায়োটিক খাবেন না। প্রতিবার পাতলা পায়খানার জন্য দুগ্লাস করে ওরস্যালাইন খাবেন। এ সময় জাউভাত, চিড়া, কলা ইত্যাদি খাবেন। ওরস্যালাইন খেতে না পারলে ডাবের পানি, বাসায় তৈরি লবণ-চিনির শরবত পান করবেন। বাজারে কিছু স্পোর্টস ড্রিঙ্কস পাওয়া যায়। সেগুলো কিংবা ঝগঈ প্লাস ইলেক্ট্রলাইট ড্রিঙ্কস খেতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, প্রতিবার পায়খানা বা বমির জন্য ৫০০সষ বা দুই গ্লাস খেতে হবে।
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
খাওয়ার পর পেট ফুলে গেলে বা গ্যাস মনে হলেই ঝুঢ়. এধারষধপ গ চার চামচ করে খেয়ে নেবেন। দিনে চারবার পর্যন্ত এটা খেতে পারবেন। মনে রাখতে হবে, এটা খেলে পাতলা পায়খানা হতে পারে। তীব্র পেটব্যথা, জ্বর, দুর্বলতা, পেট বেশি ফুলে যাওয়া, শরীর ব্যথা কিংবা শরীরে লবণের ঘাটতি দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
লেখক: হেপাটোলজি, মেডিসিন, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ও লিভার বিশেষজ্ঞ এবং সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড
শ্যামলী শাখা (ইউনিট-২), ঢাকা। ০৯৬৬৬-৭৮৭৮০৬
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?