ঈদের মোনাজাতে ‘খালেদা জিয়ার নাম না বলায়’ ইমামকে চাকরিচ্যুতির হুমকি যুবদল নেতার

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭:৫২
শেয়ার :
ঈদের মোনাজাতে ‘খালেদা জিয়ার নাম না বলায়’ ইমামকে চাকরিচ্যুতির হুমকি যুবদল নেতার

ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নাম না বলায় ইমামকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়েছেন যুবদলের এক নেতা। আজ সোমবার নারায়গঞ্জের ফতুল্লার কাশীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, কাশীপুর খিলমার্কেট এলাকার কেন্দ্রীয় ঈদগাহে দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন চরকাশীপুরের আঞ্জুবাহার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ ইমদাদুল হক।

ফেসবুক পোস্টে ওই ইমাম জানান, নামাজ শেষে দোয়ায় খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করায় তাকে হয়রানি করেছেন ফতুল্লা থানা যুবদলের সাবেক সহসম্পাদক সৈকত হাসান ইকবাল। ‘ঈদের দিনে ঈদগাহ থেকে মনে কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরলাম...’ শিরোনামে ফেসবুকে ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করেন মুফতি ইমদাদুল হক।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদের দিন সকাল পৌনে ৮টার দিকে কাশীপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে দোয়ায় ইমাম দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ সবার সুস্থতা কামনা করেন। তবে বিশেষ কারও নাম দোয়ায় উল্লেখ করা হয়নি।

দোয়া শেষে ইমাম ইমদাদুল হককে ঘিরে ধরেন যুবদল নেতা সৈকত হাসান ইকবাল ও তার অনুসারীরা। অনুরোধের পরও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ করে দোয়া করেননি ইমাম। এ কারণে তার ওপর রেগে যান যুবদল নেতা ইকবাল। ইমামের সঙ্গে তিনি উচ্চবাচ্য করতে থাকেন। পরে মুসুল্লিদের প্রতিবাদের মুখে যুবদল নেতা ও তার অনুসারীরা সেখান থেকে সরে যান।

এ বিষয়ে মুফতি মুহাম্মদ ইমদাদুল হক বলেন, নামাজ শুরু আগে বিএনপির সমর্থক স্থানীয় এক ব্যক্তি (যিনি ঈদগাহ কমিটিরও সদস্য) তাকে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা দোয়া করতে অনুরোধ জানান। কিন্তু তিনি দোয়ায় অসুস্থ সকলের আরোগ্য কামনা করেন, বিশেষ কারও নাম উল্লেখ করেননি।

ইমাম বলেন, ‘আমি নামাজ শেষ করে যথারীতি দোয়া করি এবং সেখানে কারও নাম উল্লেখ করি নাই। কারণ এটি আম-মজলিস। এখানে সব দলের লোকই আছে। তাই বিতর্ক এড়াতে নির্দিষ্ট দলের কারও নাম উল্লেখ করা উচিত হবে না ভেবেই তা করিনি। তাছাড়া উনি (খালেদা জিয়া) রাষ্ট্রীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদেও নেই, সুতরাং তার নাম উল্লেখে কোনো বাধ্যবাধকতাও নেই। আমি সকলের রোগমুক্তি কামনা করেছি। কিন্তু নামাজ শেষে যুবদল নেতা ইকবাল আমার চাকরি খেয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন। অনুরোধের পরও কেন তার নাম নেইনি সেজন্য তিনি আমার দিকে তেড়ে আসেন। খুবই আগ্রাসী আচরণ ছিল তার। মুসুল্লিরা তখন প্রতিবাদ জানালে থামেন তিনি।’

ইমামের চাকরি ‘কেড়ে নেওয়ার হুমকি’র অভিযোগ অস্বীকার করে যুবদল নেতা সৈকত হাসান ইকবাল বলেন, ‘আমি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করি নাই। আমি তাকে শুধু বললাম, অনুরোধের পরও আপনি কেন খালেদা জিয়ার নাম নিলেন না। উনি বললেন, উনি বাধ্য না। তখন উনি কই চাকরি করেন জানতে চাই। জানলাম, উনি যেই মসজিদে চাকরি করেন সেই মসজিদের সভাপতি আমাদের ছোট ভাই।’