মান্নাকে নির্বাচনী এলাকায় ঢুকতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি

অনলাইন ডেস্ক
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২:০৪
শেয়ার :
মান্নাকে নির্বাচনী এলাকায় ঢুকতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্নাকে তার নির্বাচনী এলাকা শিবগঞ্জে (বগুড়া-২ আসন) ঢুকতে দেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম। আজ মঙ্গলবার শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ ঘোষণা দেন তিনি।

সভায় মীর শাহে আলম ছাড়াও জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা শাহাদুতজামানসহ বিএনপি ও জামায়াতের নেতা এবং ১২ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় মীর শাহে আলম বলেন, মাহামুদুর রহমান মান্না একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একেকবার একেক দল করেন। তিনি ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের তার দলে নিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠিত করছেন। মান্না বদলি করবেন এই ভয়ে ইউএনও এবং থানার ওসি রনির (যুবদল নেতা) ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করছেন না।

রনির বাড়িতে হামলার জন্য নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মীদের দায়ী করে তিনি বলেন, হামলার ঘটনার উপযুক্ত বিচার না হওয়া পর্যন্ত মান্নাকে শিবগঞ্জে ঢুকতে দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে প্রশাসনকে বিএনপি ও জামায়াত কোনো প্রকার সহায়তা করবে না, প্রশাসনের কোনো সভায় আর যোগও দেবে না।

মীর শাহে আলম বলেন, নাগরিক ঐক্যের কোনো কর্মসূচি আর শিবগঞ্জে করতে দেওয়া হবে না। নাগরিক ঐক্যের যাকেই পাওয়া যাবে তাকেই ধরে থানায় সোপর্দ করা হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রনির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। উপজেলা প্রশাসনের সভাগুলোতে এরপর থেকে বিএনপি ও জামায়াত ছাড়া অন্য দলের কাউকে আমন্ত্রণ না জানাতে ইউএনর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

মীর শাহে আলম বক্তব্য শেষ করেই সভায় উপস্থিত সবাইকে নিয়ে সভা বয়কট করে বের হয়ে যান।

এর আগে ২০ ফেব্রয়ারি রাতে শিবগঞ্জ উপজেলা চত্বরের শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় ছুরিকাঢ়ঘাতের শিকার উপজেলা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম। এ নাগরিক ঐক্য শিবগঞ্জ উপজেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক সরকার বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপি সভাপতি মীর শাহে আলমকে ১ নম্বর ও বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাবকে ২ নম্বর আসামি করে ৩০ জনের নামে থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগটি এখনো মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়নি।  

আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম

এ ঘটনার জেরে গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলা যুবদলের সহসভাপতি রনি মিয়ার বাড়িতে ককটেল হামলা ও রনিসহ কয়েকজনকে মারধর করা হয়। এ ঘটনার জন্য বিএনপির তরফ থেকে নাগরিক ঐক্যকে দায়ী করা হয়। হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক সড়ক অবরোধ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।  

নাগরিক ঐক্য বগুড়া জেলা শাখার অন্যতম সমন্বয়ক সাইদুর রহমান সাগর বলেন, ‘বিএনপির লোকেরা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক শহীদুলের ওপর হামলা ও ছুরিকাঘাত করে। তারাই আবার এ ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নিজেদের কর্মীর বাড়িতে সাজানো হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা মামলা দিতে গেলে এখনও মামলা নেয়নি থানা পুলিশ।’

বিএনপি নেতা মীর শাহে আলম বলেন, ‘নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্নার হুকুমেই যুবদল নেতা রনির বাড়ি এবং তার ওপর হামলা হয়েছে। আর নাগরিক ঐক্যের শহীদুলের ওপর অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে তাদের দলের লোকেরাই হামলা করেছে। ’

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম বলেন, এখনো কোনো পক্ষ থেকেই মামলা করেনি। দুটি ঘটনারই তদন্ত করা হচ্ছে।