রান্নাঘরের যেসব জিনিস নিয়মিত পরিবর্তন করা উচিত
রান্নাঘর কেবল রান্নার জায়গা নয়, এটি আসলে আমাদের ঘরের হৃদয়। আমরা খাবার রান্না করি, পরিবার একত্রিত হয় এবং স্মৃতি তৈরি করে, রান্নাঘরের চিত্রটা এমনই। গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গায় এমন অনেককিছুই আমরা রাখি যেগুলো রান্নার প্রক্রিয়া এবং জীবনকে আরও সহজ করে। কিন্তু আবার এমন অনেক জিনিস আমরা রেখে দিই যেগুলো আসলে নিয়মিত পরিবর্তন করা জরুরি। আমাদের মধ্যেই অনেকেই হয়তো সেকথা জানেন না। চলুন জেনে নেওয়ায যাক রান্নাঘরের কোন জিনিসগুলো নিয়মিত পরিবর্তন করবেন-
১. মসলা এবং ভেষজ
আমাদের রান্নাঘরের অন্যতম প্রয়োজনীয় অংশ হলো মসলা এবং ভেষজ। তবে এগুলো দীর্ঘদিন না রেখে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে পরিবর্তন উচিত। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খেয়ে শেষ করা উচিত। আপনার প্রিয় মসলার প্যাকেট খোলার পরে তা শক্তি হারাতে শুরু করে, যার অর্থ এটি যত দেরি করে রান্নায় ব্যবহার করবেন ততই খাবারকে সুস্বাদু করার ক্ষমতা কমতে থাকবে। প্রতি ৬-১২ মাস অন্তর ব্লেন্ড করা শুকনো মসলা বদলানো উচিত, আর আস্ত মসলা দুই বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এসব মসলার সতেজতা বজায় রাখার জন্য সরাসরি তাপ এবং সূর্যালোক থেকে দূরে বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করুন।
২. রান্নাঘরের তোয়ালে
রান্নাঘরের তোয়ালে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসের একটি। কারণ রান্নার সময় বারবার এতে হাত মোছা হয়। আপনার রান্নার তেল-ঝোলের সঙ্গে এর সম্পর্ক হয় নিবিড়! এরপর ধীরে ধীরে রান্নাঘরের তোয়ালে ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণুর প্রজননস্থলে পরিণত হয় যা আপনার হাতে স্থানান্তরিত হতে পারে। রান্নাঘর পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে আপনার ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে প্রতিদিন বা কমপক্ষে প্রতি সপ্তাহে আপনার রান্নাঘরের তোয়ালেগুলি পরিবর্তন করুন। জীবাণু দূরে রাখতে প্রতিদিন রান্নাঘরের তোয়ালে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন।
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
৩. নন-স্টিক প্যান
নন-স্টিক প্যান দ্রুত রান্না এবং সহজে পরিষ্কার করার জন্য একটি আশীর্বাদ, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এটি চিরকাল স্থায়ী হয় না। আপনি যখন নিয়মিত নন-স্টিক প্যান ব্যবহার করেন, তখন এর আবরণ ক্ষয়প্রাপ্ত হতে পারে, এই পাত্রে রান্না করা খাবার খাওয়ার ফলে সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। সাধারণত, নন-স্টিক প্যান প্রতি ২-৩ বছর পরপর অথবা আবরণ সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পরিবর্তন করা উচিত।
৪. কাঠের কাটিং বোর্ড
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
কাঠের কাটিং বোর্ড এর স্থায়িত্ব এবং প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের জন্য জনপ্রিয়। তবে ধীরে ধীরে এতে ফাটল এবং কোণ তৈরি হতে পারে যা ব্যাকটেরিয়াকে আশ্রয় দিতে পারে। এটি সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি নিয়মিত কাঠের কাটিং বোর্ড ব্যবহার করেন। কয়েক বছর পরপর কাঠের কাটিং বোর্ড পরিবর্তন করা ভালো। যদি এর শেলফ লাইফ বাড়াতে চান তাহলে পানি ভিজিয়ে রাখা এবং তেল দেওয়া এড়িয়ে চলুন।
৫. প্লাস্টিক স্টোরেজ পাত্র
আমরা সবাই বছরের পর বছর ধরে আমাদের প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করতে পছন্দ করি। কিন্তু যেকোনো প্লাস্টিকের পাত্র, বিশেষ করে যেগুলো ওয়ান টাইম ইউজের জন্য তৈরি, তা খুব বেশি সময় ধরে ব্যবহার করা বিপজ্জনক হতে পারে। ধীরে ধীরে প্লাস্টিক ভেঙে যায় এবং রাসায়নিকগুলোর খাবারে প্রবেশ করে। যদি দেখেন যে আপনার প্লাস্টিকের খাবারের পাত্রে ফাটল, বিবর্ণতা বা দুর্গন্ধ রয়েছে, তাহলে সেটি ফেলে দিন।
৬. রান্নাঘরের স্পঞ্জ
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?
রান্নাঘরের তোয়ালের মতোই স্পঞ্জও ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষেত্রও হয়ে উঠতে পারে। স্পঞ্জে লক্ষ লক্ষ জীবাণু থাকতে পারে, বিশেষ করে যদি সেটি চর্বিযুক্ত থালা বা কাউন্টারটপ পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহৃত হয়। রান্নাঘর এবং খাবারকে স্বাস্থ্যকর রাখতে প্রতি ১-২ সপ্তাহে অথবা যখন সেগুলো দুর্গন্ধ শুরু করে বা ভেঙে যায় তখনই পরিবর্তন করুন।