ঢাবি শিক্ষক সমিতির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান সাদা দলের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য বরাবর ঢাবি শিক্ষক সমিতির দেওয়া চিঠির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে সাদা দল। গতকাল মঙ্গলবার ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম এবং অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকারের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সমিতির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের বিরোধিতা এবং ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অনুগত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন শিক্ষক সমিতি এখনো নিজেদের বৈধ সমিতি হিসেবে দাবি করে উপাচার্য বরাবর প্রেরিত পত্রের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। আমরা শিক্ষক সমিতির নামে দেয়া এই পত্রের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে নীল দল ছাড়া অন্য কোনো দল ও প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় নীল দলের প্যানেলকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। গত ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টে পরিচালিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের সময় অভ্যূত্থান বিরোধী অবস্থান এবং স্বৈরশাসকের পক্ষে নির্লজ্জ ভূমিকা পালনের জন্য গত আগস্ট মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দল সমর্থক শিক্ষকবৃন্দ বিনা ভোটে নির্বাচিত তৎকালীন শিক্ষক সমিতিকে প্রত্যাখ্যান করে।
শুধু তাই নয়, স্বৈরশাসক খুনি শেখ হাসিনার সরকারের পতন ও দেশ ছেড়ে তার পলায়নের ঠিক দুদিন আগে গণভবনে উপস্থিত হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সমর্থন এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সাদা দল তৎকালীন শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের বিচার দাবি করে। শিক্ষক সমিতির এই গণবিরোধী ভূমিকার জন্যে ইতোমধ্যেই সংগঠনটি একটি গণধিকৃত সংগঠনে পরিণত হয়েছে। দেশের বিবেকবান অনেক ব্যক্তিও ইতোমধ্যে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছে।
সাদা দল বলেছে, ‘আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় উল্লেখ করতে চাই যে, শিক্ষক সমিতির নামে দেওয়া পত্রে ২০০৭ সালের যে দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হয়েছে তা দেখিয়ে ফ্যাসিস্টের দোসর এই শিক্ষক সমতিকে বৈধ শিক্ষক সমিতি হিসেবে দাবি করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ সেই সময় শিক্ষক সমিতির দায়িত্ব চলমান রাখা হয়েছিল শিক্ষকদের সর্বসম্মত সমর্থনের ভিত্তিতে। তা ছাড়া সে সময়কার শিক্ষক সমিতির অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা কেবল শিক্ষক সমাজের কাছেই নয়, গোটা জাতির কাছে ছিল প্রশংসনীয়। কিন্তু বৈধ শিক্ষক সমিতি হিসেবে দাবীদার তথাকথিত এই শিক্ষক সমিতি ইতোমধ্যেই শিক্ষকগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত ও দেশবাসী কর্তৃক নিন্দিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজের মর্যাদাহানি এবং ঐতিহ্যকে ভুলণ্ঠনকারী ফ্যাসিস্টের দোসর এই শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বের দাবীকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। একই সাথে শিক্ষক সমিতির পরিচয় ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া তাদের গণবিরোধী ভূমিকা এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার প্রতি অব্যাহত সমর্থনের জন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও সরকারে প্রতি আমাদের জোর দাবি পূণর্ব্যক্ত করছি।’