অঞ্জনার সম্পত্তির দলিল-ব্যাংক চেক ও কাগজপত্র কোথায়?
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান মারা যান গেল ৪ জানুয়ারি। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘দস্যু বনহুর’খ্যাত এই অভিনেত্রী।
কেউ বলছে অঞ্জনার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। আবার কারো কথায় এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু। চিকিৎসায় অবহেলাসহ আরও অনেক কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অভিনেত্রীর কাছের বেশ ক’জন শিল্পী। অনেকের সন্দেহের তীর অঞ্জনার পালিত ছেলে নিশাত মনি’র দিকে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে চিত্রনায়ক ও শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি ডিএ তায়েবকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আগামী তিনদিন পর এই কমিটিকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির উদ্যোগে সদ্য প্রয়াত শিল্পী অঞ্জনা রহমান ও প্রবীর মিত্রের মাগফেরাতের জন্য মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। দোয়া মাহফিল শেষে অঞ্জনার ছেলে (পালিত) নিশাত মনির উপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিয়ে আলোচনায় বসেন শিল্পী সমিতির নেতারা।
আরও পড়ুন:
স্ত্রীর কবরের পাশে পরীর নানা সমাহিত
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক আলমগীর, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, অভিনেতা ডিএ তায়েব, সুব্রত, সনি রহমান, অভিনেত্রী রুমানা ইসলাম মুক্তি, অঞ্জনা রহমানের বোন রঞ্জনা ও পালিত মেয়ে জামাই কামরুল আলম রিপনসহ আরও অনেকে।
আলোচনা শেষে শিল্পী সমিতির মুখপাত্র ডিএ তায়েব বলেন, ‘সদ্যপ্রয়াত চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমানের মৃত্যু নিয়ে নানা ধরনের কথা আসছে। কেউ বলছেন অঞ্জনা আপার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে আবার কেউ বলছেন তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আজ (গতকাল) আমরা বসেছি। আমাদের কাছে অনেক বিচ্ছিন্ন ঘটনার অভিযোগ এসেছে। শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে একটি ছায়া তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিপ্লব শরীফ, নাহিদা আশরাফ আন্না, রুমানা ইসলাম মুক্তি ও ইউসুফ খান। আগামী তিন দিনের মধ্যে আমাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আলোচনার সময় চিত্রনায়ক আলমগীর ও রঞ্জনা কয়েকটি প্রশ্ন করেছে মনিকে। আমরা জানতে চাই আসলে সমস্যা কোথায়। অঞ্জনা আপার সম্পত্তির কাগজপত্র, দালিল, ব্যাংকড্রাফ্ট, ব্যাংকের চেক বইসহ কিছু বাসায় পাওয়া যায়নি। এগুলো উদ্ধার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেগুলো পাওয়া গেলে আমরা শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে যেকোনো সিদ্ধান্তে যাব।’
অঞ্জনার মৃত্যুর পর শোনা যায়, অভিনেত্রীর দুটি বাড়ি ও একটি প্লট ছিল। সেগুলো বিক্রি করে তিনি নাকি ভাড়া বাসায় থাকতেন, বিষয়টি কতটা সত্য- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএ তায়েব বলেন, ‘অঞ্জনা আপার পৈত্রিক কিছু সম্পত্তি ছিল। এছাড়া আরও কিছু সম্পত্তি বিক্রির টাকা আসছে। সেগুলোর কোনো হিসেব আমরা পাচ্ছি না। এগুলো চিত্রনায়িকা আন্না, মুক্তি, কোরিওগ্রাফার ইসুফসহ অনেকেই জানতেন। তাদের কাছ থেকেও আমরা নানা মন্তব্য পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আমাদের এ ছায়া তদন্ত কমিটি গঠন করা। তদন্ত করে আমাদের কাছে অসংলগ্ন কিছু পেলে তিনদিন পর আমারা পুলিশে জানাব। এক কথায় আগামী তিনদিনের মধ্যে ১৫ বছরের ইতিহাস পরিষ্কার হবে। এ ক্ষেত্রে মামলাও হতে পারে।’
আরও পড়ুন:
নানাকে নিয়ে পরীর আবেগঘন পোস্ট
এ সময় অভিযোগের বিষয়ে অঞ্জনার পালিত ছেলে নিশাত মনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সবগুলোর উত্তর আমি তিনদিন পর দেব।’