কর্মক্ষেত্রে যোগ দেবে এআই এজেন্ট
সময়ের সঙ্গে বাড়ছে এআইয়ের ব্যবহার। এবার শোনা যাচ্ছে, চলতি বছর থেকেই কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারে ভার্চুয়াল কর্মী। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সযুক্ত (এআই) কিছু প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার নিজে নিজে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে। চ্যাটজিপিটি প্রধান স্যাম অল্টম্যান এদের নাম দিয়েছে এআই এজেন্ট। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের এআই এজেন্টের ব্যবহার ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ধারণা করা হয়, এর মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে মানুষের বিকল্প আসা শুরু হয়েছে। ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন
এআই এজেন্ট কী?
একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (অও) এজেন্ট হলো একটি সফ্টওয়্যার প্রোগ্রাম, যা পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য পূরণের জন্য স্বনির্ধারিত কাজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদন করতে পারে। মানুষ লক্ষ্য নির্ধারণ করে, কিন্তু একজন অও এজেন্ট স্বাধীনভাবে সেই লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য সর্বোত্তম ক্রিয়াকলাপগুলো বেছে নেয়।
মার্কিন প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের প্রধান স্যাম আল্টম্যান এআই এজেন্টের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন। তিনি বলছেন, এ বছরের কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হতে পারে এআই এজেন্ট নামের এক ধরনের ভার্চুয়াল কর্মীরা। এর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোয় কাজের ধারায় পরিবর্তন আসবে। এক ব্লগ পোস্টে বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়েছেন অল্টম্যান। খবর দ্য গার্ডিয়ান। কর্মক্ষেত্রে এআই এজেন্টের যোগদানের কারণ সম্পর্কে অল্টম্যান লিখেছেন, এআই ফার্মগুলো প্রযুক্তিতে বড় বিনিয়োগের মাধ্যমে মুনাফা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
এআই এজেন্ট নিয়োগ দিচ্ছে যারা
চ্যাটজিপিটি নির্মাতা ওপেনএআইয়ের পেছনে বিনিয়োগ করেছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে তাদের এআই এজেন্ট তৈরির ঘোষণা দিয়েছে। এই এজেন্ট মূলত স্বয়ংক্রিয়ভাবে নানা কাজ সম্পন্ন করতে পারে। ভার্চুয়াল এই এজেন্টকে নিয়োগদাতাও পাওয়া গেছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাকিনসে ওপেনএআইয়ের ভার্চুয়াল এজেন্ট নিয়োগ দিচ্ছে। এআই এজেন্ট বা টুল নিজ থেকে কাজ সম্পাদন করতে পারে। প্রযুক্তিটির প্রথম ব্যবহারকারীদের মধ্যে একটি হচ্ছে পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাককিনজি।
ব্লগ পোস্টটিতে অল্টম্যান বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ২০২৫ সালের মধ্যে এআই এজেন্টগুলো প্রথমবার কোম্পানিতে কাজ শুরু করতে পারে। এসব এজেন্ট থেকে যে ফলাফল পাওয়া যাবে তা ব্যাপকভাবে পরিবর্তন বয়ে আনবে। চলতি মাসেই ‘অপারেটর’ নামে এআই এজেন্ট উন্মোচন করার কথা ভাবছে ওপেনএআই।
এর আগে মাইক্রোসফট নিজেদের কোপাইলট স্টুডিও পণ্য ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যানথ্রপিক ক্লোড ৩.৫ সন্নেট এআই মডেল চালু করেছে। মাউসের কার্সর স্থানান্তর ও টেক্সট টাইপ করাসহ এআই মডেলগুলো কম্পিউটারে কাজ করতে পারে। ম্যাকেঞ্জির তৈরি করা এআই এজেন্টের সাহায্যে নতুন ক্লায়েন্টদের অনুসন্ধানের জন্য ফলোআপ মিটিং শিডিউল করার মতো কাজ পরিচালনা করা যাবে।
প্রতিষ্ঠানটি পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে কাজের প্রায় ৩০ শতাংশ সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হবে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অপারেটর ব্যবহারকারীদের জন্য কম্পিউটারে কোড লেখা বা ভ্রমণসংক্রান্ত টিকিট বুকিংয়ের মতো কাজ করতে পারবে। গত বছর মাইক্রোসফটের এআই প্রধান মোস্তাফা সুলেমান বলেছিলেন, কোম্পানি এমন এজেন্ট তৈরি করছে, যেগুলো নিজেরাই কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তিনি কিছু চমকপ্রদ ডেমো দেখেছেন, যেখানে এজেন্ট স্বাধীনভাবে লেনদেন সম্পন্ন করেছে।
আরও পড়ুন:
যে গ্রহে হয় বালুবৃষ্টি
তবে এর উন্নয়নের সময় কিছু বড় ভুলও ঘটেছে। তবু তিনি আশা প্রকাশ করেছেন এমন একটি এজেন্ট কয়েক বছরে নয়, বরং কয়েক মাসেই প্রস্তুত হবে। আল্টম্যান তার ব্লগে লিখেছেন, ওপেনএআই কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তা (এজিআই) তৈরি করতে জানে। তাত্ত্বিক এ টার্ম সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেছিলেন ‘মানুষের তুলনায় সামগ্রিকভাবে বেশি বুদ্ধিমান এআই সিস্টেম’ এটি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমরা এখন আত্মবিশ্বাসী। কারণ কীভাবে এজিআই তৈরি করতে হয় আমরা তা জানি। ওপেনএআই এখন ‘সুপার ইন্টেলিজেন্স’ তৈরির দিকে মনোনিবেশ করছে, যা মানুষের চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট। আমরা আমাদের বর্তমান পণ্যে খুশি। তবে আমাদের লক্ষ্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের। সুপারইন্টেলিজেন্সের সাহায্যে আমরা বিশ্বাস করি আমরা সবকিছু অর্জন করতে পারব।’
আরও পড়ুন:
এআই টিম ভেঙে দিল মেটা