জবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন বর্জন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের
আসন্ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ২০২৫ বর্জন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল। গতকাল সোমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ২০২৫ প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড মো. আব্দুল আলীমের কাছে আবেদনপত্রের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিৎ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন জবি নীল দলের শিক্ষকরা।
আবেদনপত্রে তারা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল শিক্ষকবৃন্দের সংগঠন নীলদলের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানবেন। ২০১২ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিসিস) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে একটি পেশাগত সংগঠন হিসেবে প্রতিবছর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সম্মান-মর্যাদা বৃদ্ধি, শিক্ষার সামগ্রিক মানোন্নয়নে শিক্ষকদের প্রতিনিধি হিসেবে অত্যন্ত দৃঢ় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
এরই ধরাবাহিকতায় প্রতি বছরের মতো এবারও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেওয়া হয় এবং শিক্ষকবৃন্দ নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকেন। মনোনয়ন ফরম উত্তোলন ও জমাদানের সময় চলাকালে (৮/১২/২০২৪ তারিখ) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি দিয়ে শিক্ষকদের একটি বড় অংশকে (বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকবৃন্দের সংগঠন নীলদলের শিক্ষকদের) মনোয়ন ফরম প্রদান না করার জন্য লিখিতভাবে হুমকি ও চাপ প্রদান করে। এছাড়া নির্বাচন কমিশন গঠনের অব্যবহিত পরেই দশ জন সম্মানিত সহকর্মী স্বাক্ষর দিয়ে তাদের ভাষায় ফ্যাসিবাদী শিক্ষকদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার জন্য কমিশনকে লিখিত চিঠি ও চাপ প্রদান করে যা অনভিপ্রেত,অনাকাঙ্ক্ষিত এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থি।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অগণতান্ত্রিক আচরণ নিন্দনীয়।দুটো চিঠিই (শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় সহকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা এবং ভীতির সঞ্চার করেছে এবং সামগ্রীকভাবে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাম্পাসের এই অস্থিতিশীল পরিবেশে নিজেদের সম্মান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিবেচনায় আমরা নীলদলের শিক্ষকরা আসন্ন শিক্ষক সমিতি নির্বাচন ২০২৫ বর্জনকরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
উক্ত আবেদনপত্রে আরও বলা হয়, আমরা মনে করি, যে কোন সভ্য সমাজে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরনে প্রতিনিধি নির্বাচন বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের প্রথম ধাপ। শিক্ষকদের এই সংগঠনকে অকার্যকর করতে যারা লিখিত চিঠি ও হুমকি প্রদান করেছেন এবং করে আসছেন তারা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী নয় এবং এ ধারা অব্যাহত থাকলে দেশ ও জাতি অচিরেই আরও গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ ২০২৫ নির্বাচনে আওয়ামী মতাদর্শের কোনো শিক্ষককে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দিতে ও তাদের কাছে মনোয়নপত্র বিক্রয় না করতে নির্বাচন কমিশন ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের পক্ষে আবু বকর খান, মো. রাকিব, ফেরদৌস, মো. তানজিল, সিয়াম হোসাইন অনিক কুমার দাস স্বাক্ষরিত এ স্বারকলিপি প্রদান করেন।