চার্জ ছাড়াই ব্যাটারি চলবে অনন্তকাল!
বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীরা এমন একটি ব্যাটারি তৈরি করেছেন, যা কোনো ডিভাইসকে হাজার হাজার বছর এনার্জি সরবরাহ করে যাবে। কুলহামে অবস্থিত ইউকে এটমিক এনার্জি অথরিটি (ইউকেএই) এবং অক্সফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের প্রথম কার্বন-১৪ ডায়মন্ড ব্যাটারি তৈরি করতে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করেছে। ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন- আজহারুল ইসলাম অভি
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি অকুলার ইমপ্লান্ট, শ্রবণযন্ত্র এবং পেসমেকারের মতো চিকিৎসাশাস্ত্রে ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোতে ব্যবহার করা যেতে পারে। ফলে এসব ডিভাইস প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে। সারাহ ক্লার্ক, যিনি ইউকেএইতে ট্রিটিয়াম ফুয়েল সাইকেলের ডিরেক্টর, তিনি একে অবিচ্ছিন্ন শক্তি প্রদানের একটি ‘নিরাপদ, টেকসই উপায়’ বলে অভিহিত করেছেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, নতুন এই ব্যাটারি তৈরি করা হয়েছে ল্যাবে তৈরি হীরা দিয়ে, যা ‘কার্বন-১৪’ নামে এক ধরনের তেজস্ক্রিয় পদার্থকে ঘিরে রাখে। হীরার সেমিকন্ডাক্টর বৈশিষ্ট্য তেজস্ক্রিয়তাকে বিদ্যুতে রূপান্তর করে। একই সঙ্গে হীরার অতিকঠিন গঠন ব্যাটারির নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং তেজস্ক্রিয়তা বাইরে ছড়াতে দেয় না। কার্বন-১৪ নামের তেজস্ক্রিয় বস্তুটি সাধারণত জীবাশ্মের বয়স নির্ধারণে ব্যবহার করেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। প্রতি ৫ হাজার ৭০০ বছরে এই পদার্থটি মাত্র অর্ধেক তেজস্ক্রিয়তা হারায়। যুক্তরাজ্যের পারমাণবিক শক্তি কর্তৃপক্ষ (ইউকেএইএ) ও ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের প্রকৌশলীরা যৌথভাবে হীরার ব্যাটারির একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করেছেন। ১০ মিমি চওড়া এবং ০.৫ মিমি পুরু এই ব্যাটারিটির আকার অনেকটা ঘড়ির ব্যাটারির মতো। এই ব্যাটারি স্যাটেলাইট ও মহাকাশ অভিযানে ব্যবহৃত ডিভাইস, পেসমেকার ও হিয়ারিং এইডের মতো মেডিক্যাল ডিভাইসে ব্যবহার হতে পারে। শুধু তা-ই নয়, ভবিষ্যতে এটি আমাদের বিভিন্ন ডিভাইসে ব্যবহৃত লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির বিকল্প হতে পারে। ইউকেএইএ-এর প্রকৌশলী ফাতিমা সানি বলেন, ‘ব্যাটারি-শিল্পে বিপ্লব আনবে ডায়মন্ড ব্যাটারি। লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির বর্জ্য বিদায় নেবে। ভবিষ্যতে প্রায় সবকিছুতেই ডায়মন্ড ব্যাটারি ব্যবহার করা যাবে।’ এই ব্যাটারি তৈরিতে ব্যবহৃত কার্বন-১৪ মূলত নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য থেকে সংগৃহীত। ফলে ব্যাটারিটি পরিবেশবান্ধব এবং কম নির্গমনকারী।
এটা যেভাবে কাজ করে?
- এই ব্যাটারিতে কার্বন-১৪ ব্যবহার করা হয়েছে। এটি মূলত কার্বনের একটি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ, যা ৫৭০০ বছর পর পর তার অর্ধেক শক্তি হ্রাস করে। যার অর্থÑ এই ব্যাটারি হাজার হাজার বছর পরও তার অর্ধেক শক্তি ধরে রাখবে।
- প্রোটোটাইপ ব্যাটারিগুলো ০.৫ মিমি পর্যন্ত পুরুত্বসহ ১০ মিমি ী ১০ মিমি।
আরও পড়ুন:
যে গ্রহে হয় বালুবৃষ্টি
- এই ব্যাটারিতে কার্বন-১৪ বেছে নেওয়া হয়েছে। কারণ এটি স্বল্পপরিসরে বিকিরণ নির্গত করে, যা আবার দ্রুত কোনো কঠিন পদার্থ দ্বারা শোষণ করে ফেলা যায়।
- এটি সোলার প্যানেলের মতোই কাজ করে, তবে আলোক কণার পরিবর্তে এটি হীরার কাঠামোর মধ্য থেকে দ্রুত-চলমান ইলেকট্রনগুলোকে ক্যাপচার করে।
আরও পড়ুন:
এআই টিম ভেঙে দিল মেটা