মাথাব্যথার কারণ ও প্রতিরোধের উপায়
মাথাব্যথা দুই ধরনের- প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি হেডেক। মাইগ্রেন, টেনশন টাইপ হেডেক, ক্লাস্টার হেডেক ইত্যাদি হলো প্রাইমারি হেডেক। আর সেকেন্ডারি হেডেক হচ্ছে সাইনোসাইটিস, মাসটয়ডাইটিস, গ্লুুকোমা, স্ট্রোক, মাথায় আঘাত পাওয়া, মস্তিষ্কের টিউমার ইত্যাদি।
মাইগ্রেন থেকে মুক্তির উপায় : প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সেটি হতে হবে পরিমিত। অতিরিক্ত বা কম আলোয় কাজ না করা। কড়া রোদ বা তীব্র ঠা-া পরিহার করতে হবে। উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা। বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা। মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে বেশি বেশি পানি পান করা (বিশেষ করে বমি হয়ে থাকলে), বিশ্রাম করা, ঠা-া কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখা উচিত।
মাইগ্রেন প্রতিরোধী খাবার : ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক। খেজুর ও ডুমুর ব্যথা উপশম করে। সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি নিয়মিত খেলে উপকার হয়। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি মাইগ্রেন প্রতিরোধে সাহায্য করে। তিল, আটা ও বিটে প্রচুর ক্যালসিয়াম রয়েছে। আদার টুকরো বা রস দিনে দুবার, জিঞ্জার পাউডার পানিতে মিশিয়ে খেলে ম্যাইগ্রেন ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
যেসব খাবার খাবেন না : চা, কফি, কোমল পানীয়, চকোলেট, আইসক্রিম, দই, ডেইরি প্রোডাক্ট (দুধ, মাখন), টমেটো ও সাইট্রাস জাতীয় ফল খাবেন না। গম জাতীয় খাবার, যেমন- রুটি, পাস্তা, ব্রেড ইত্যাদি। আপেল, কলা ও চিনাবাদাম।
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
খেয়াল রাখবেন : ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় একটা ডায়েরি রাখা, যাতে নোট করে রাখতে পারেন কোন কোন খাবার ও কোন কোন পারিপার্শ্বিক ঘটনায় ব্যথা বাড়ছে বা কমছে। এক সপ্তাহ নোট করলে আপনি নিজেই নিজের সমাধান পেয়ে যাবেন।
সাইনোসাইটিসে মাথাব্যথা : যাদের ঘন ঘন সর্দি-কাশি হয়, তাদের সাইনোসাইটিস থেকে এ ধরনের মাথাব্যথা হয়। তখন গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। নাক পরিষ্কার করতে হবে খুব ভালোভাবে। ঘরের চিকিৎসায় কাজ না হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ খেতে হতে পারে। যাদের ধুলাবালিতে অ্যালার্জি আছে, তারা ধুলা থেকে দূরে থাকবেন। যখনই কেউ সর্দি-সমস্যায় আক্রান্ত হন, নাক সঠিকভাবে পরিষ্কার করবেন। সাইনোসাইটিসের ব্যথার সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসের তেমন সম্পর্ক নেই। আলো বা উচ্চ শব্দে ব্যথা বাড়ার কোনো কারণ নেই।
চক্ষুজনিত মাথাব্যথা : মাথাব্যথা চোখে, কপালের দুদিকে বা মাথার পেছনে হয়। এ ব্যথায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
হরমোনজনিত মাথাব্যথা : মেয়েদের ঋতুচক্রের সময় হরমোনের ওঠানামার কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধ খেলেও ব্যথা হয়।
পরামর্শ : পর্যাপ্ত পানি পান করুন। সময়মতো পুষ্টিকর খাবার খান। পরিমাণমতো ঘুমাবেন। কাজের ফাঁকে চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন। মাথাব্যথা হলে কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। হাসুন। হালকা ব্যথা উপশমে হাসি উপকারী। প্রাণভরে শ্বাস নিন। মানসিক চাপ বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে হলে খোলা কোনো জায়গা থেকে হেঁটে আসতে পারেন।
লেখক : অধ্যাপক; ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ, জাতীয় স্নায়ুবিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?
চেম্বার: পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড
শ্যামলী শাখা, ঢাকা। ০১৮৬৫৪৪৪৩৮৬