রিমান্ড শুনানিতে কামরুলকে ‘সালাম’, নাজিরের কার্যালয় ভাঙচুর
রিমান্ড শুনানিতে সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের অভিযোগে শাহ মো. মামুন নামের ঢাকা মহানগর আদালতের নাজিরের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১টার পর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত এ কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি প্রসিকিউশন বিভাগ ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জানা গেছে, কামরুল ইসলামকে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আজ সকালে আদালতে হাজির করে পুলিশ। রিমান্ড আবেদনের শুনানির জন্য তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রট আদালতের ৫ নম্বর এজলাস কক্ষে ওঠানো হয়। শুনানিকালে এজলাস কক্ষে সাধারণের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। কিন্তু সেখানে বাবার সঙ্গে দেখা করতে আসেন কামরুল ইসলামের ছেলে ডা. তানজির ইসলাম অদিত। তার সঙ্গে সেখানে হাজির হন শাহ্ মো. মামুন। তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে সহজেই আদালতে প্রবেশ করে কাঠগড়ায় কামরুল ইসলামকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করেন।
আরও পড়ুন:
চীনা অ্যাপের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব মানুষ
আদালতের ভেতরে সাধারণের প্রবেশের অনুমতি না থাকলেও তিনি কামরুল ইসলামের ছেলেকে এজলাসের ভেতরে প্রবেশে সহযোগিতা করেন। যা নজরে আসে রাষ্ট্রপক্ষের এবং বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের। তাই তখন থেকেই কয়েকজন আইনজীবী আদালতকক্ষে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর দুপুর ১টার পর আইনজীবীরা এ নিয়ে আদালতপাড়ায় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে যান এবং কয়েকজন আইনজীবী নাজিরের কার্যালয়ে গিয়ে ভাঙচুর চালান।
মামুনের এ ধরনের কাজের বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেনকে অবহিত করেছেন ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা। পরে বিচারক তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
ভারত সফরে গেলেন প্রধান বিচারপতি
এর আগে মামুনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ চেয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর অভিযোগ দেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির আইনজীবী মারজিয়া হিরা। সেখানে উল্লেখ করা হয়, আজ সকালে কামরুল ইসলামের রিমান্ড শুনানিতে তার ছেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতের ভেতরে দাঁড়িয়ে ছিল। তখন মহানগর আদালতের নাজির শাহ আসামি কামরুল ইসলামকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করেন। আসামির ছেলেকে আদালতের ভেতরে প্রবেশের বিষয়ে সহযোগীতা করেন তিনি। নাজির গত জাতীয় নির্বাচনে আসামি কামরুল ইসলামের নির্বাচন পরিচালনায় সহযোগীতা করেছিল।
নারজির মামুন বলেন, ‘মহানগর আদালতে কামরুল ইসলাম যখন আসতেন তখন আমার অফিসে বসতেন। এইভাবে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। আজকে সকালে একটি কাজে সিএমএম আদালতে যাই। হঠাৎ সাবেক মন্ত্রী কামরুলের সঙ্গে দেখা হয়। তখন তিনি আমাকে ডেকে বলেন, ‘‘এই নাজির কেমন আছো?” আমি কাজ শেষে চলে এসেছি। তার ছেলেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাকে ফোনে জানানো হয়েছে কিছু একটা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আমার ফোর্স সেখানে গেছে। তারা রিপোর্ট দিলে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’