দিনে কতটুকু লবণ খাওয়া উচিত, জানেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫
শেয়ার :
দিনে কতটুকু লবণ খাওয়া উচিত, জানেন?

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার একটি অপরিহার্য উপাদান হলো লবণ। লবণ ছাড়া রান্না প্রায় হয় না বললেই চলে। কিন্তু এ কথাও আমরা অনেকেই জানি যে, অতিরিক্ত মাত্রায় লবণ খেলে বাড়ে রক্তচাপ। অতিরিক্ত মাত্রায় লবণ খেলে শুধু রক্তচাপ বাড়াই নয়, একই সঙ্গে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা মাথাচাড়া দিতে পারে। বাড়ে কিডনি, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি সহ নানা সমম্যা!

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি সার্ভে করে প্রমাণ পেয়েছে লবণ কম খেলে হৃদরোগ ও কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা এড়ানো যায়। আগামী ১০ বছরে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের জীবন বেঁচে যাবে, যদি তারা লবণ খাওয়া কমিয়ে দেন।

উল্লেখ্য, বিশ্বের অনেক দেশেই মানুষ প্যাকেটজাত খাবারে উপস্থিত অত্যধিক লবণ খাচ্ছেন, যার কারণে রোগও বাড়ছে। ভারতেও নিত্যদিন একই ঘটনা ঘটছে। এই কারণেই, আমাদের এটা জানা জরুরি যে দিনে কতটা লবণ খেতে হবে এবং কীভাবে এর পরিমাণ কমিয়ে অনেক রোগের ঝুঁকি এড়ানো যাবে?

দিনে কতটা লবণ খাবেন

ডব্লিউএইচওর একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে, প্রতিদিন ৫ গ্রামের কম লবণ খাওয়া উচিত। এতে দুই গ্রামের কম সোডিয়াম ঢুকবে শরীরে। এই নিয়ম মানলে আগামী ১০ বছরে হৃদরোগ এবং দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে মৃত্যুর হাত থেকে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ বেঁচে যাবেন। দ্য ল্যানসেট পাবলিক হেলথ-এ এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।

জানা গিয়েছে, ভারতে, একজন ব্যক্তি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১১ গ্রাম লবণ খান, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত সীমার চেয়ে অনেকটা বেশি। অথচ মানুষের মাথায় এটা থাকছে না যে বেশি লবণ খাওয়ার কারণেই উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের মতো গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

ভারতীয় খাবারে লবণের ব্যবহার

এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় খাবারে লবণের ব্যাপক ব্যবহার হয়। ২০১৪ সালে, ভারতীয়রা রান্না করার সময় ৮০ শতাংশেরও বেশি বসোডিয়াম গ্রহণ করেছিল। যাইহোক, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্যাকেটজাত খাবারের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে এই অনুপাতেও পরিবর্তন আসছে। নোনতা স্ন্যাকস এবং রেডি-টু-ইট খাবারের বিক্রি দ্রুত বেড়েছে, ফলে ভারতীয়দের সোডিয়াম গ্রহণের পরিমাণও বেড়ে চলেছে। যদিও ব্রিটেন, আর্জেন্টিনা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলি প্যাকেটজাত খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ কমাতে সক্ষম হয়েছে। 

২০১৮ সালে ভারতের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটিও 'ইট রাইট ইন্ডিয়া' নামে একটি উদ্যোগ নিয়েছিল। সোডিয়াম খাওয়া কমাতে, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করতে নেওয়া হয়েছিল উদ্যোগ। কিন্তু, এক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট নয়।

সবশেষে বলা যায়, আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য সুষম খাদ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সুষম খাদ্যেই প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি থাকে। তবে, আমাদের লবন এবং তেল খাওয়া কমিয়ে দেওয়া উচিত, কারণ এগুলোর অত্যধিক ব্যবহার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৫ সালের মধ্যে সোডিয়াম গ্রহণের পরিমাণ ৩০ শতাংশ হ্রাস করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।