রমেকের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার প্রতিবাদে মানববন্ধন
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ মাহফুজার রহমানের সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো ও তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার বেলা ১১টার দিকে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে সচেতন নাগরিক, সাবেক ও বর্তমান মেডিকেল শিক্ষার্থীর ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিগত সরকারের দোসররা নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ মো. মাহফুজার রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষ পদে যোগদানে বাধা দিচ্ছে। মাহফুজার রহমান তার যোগ্যতায় রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছেন। তিনি অধ্যক্ষ হওয়ায় বিগত সরকারের আওয়ামী লীগের দোসররা সুবিধা নিতে পারবে না বলেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তুলে তাকে সরানোর পাঁয়তারা করছে। মাহফুজার রহমানকে রমেকের অধ্যক্ষ পদে যোগদানে বাধা দিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
মানববন্ধনে সচেতন রংপুরবাসীর পক্ষে সভাপতিত্ব করেন হাজী কল্যাণ সংস্থার সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান, সঞ্চালনা করেন রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলু, হাজী কল্যাণ সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আকবর বাদল। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন হাজী কল্যাণ সংস্থা সম্মানিত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবু সাঈদ, মিস্ত্রিপাড়া মসজিদের সাবেক ইমাম জয়নাল আবেদিন, মৌলভীবাজার আলিম সিনিয়র মাদ্রাসার সভাপতি মোশাররফ হোসেন সরকার, গজঘণ্টা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আক্তারুজ্জামান শাহীন, কান্ডারি বহুমুখী সমবায় সমিতির সহসভাপতি মো. আজহারুল ইসলাম, সাধারণ জনগণের পক্ষে লিয়াজুর রহমান, মেডিকেল শিক্ষার্থী জান্নাতুল, মাহামুদ, আজিজুর রহমান, শিক্ষক, টিএমএসএস পলিটেকনিকসহ প্রমুখ।
হাজী কল্যাণ সংস্থার সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মাহফুজার রহমান কোনো রাজনীতি করেননি। যার ফলে যোগ্যতা থাকা সত্যেও এত দিন পদায়ন পাননি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে মূল্যায়ন করে যোগ্যতার ভিত্তিতে রংপুর মেডিকেলে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করেছেন। সরকারি সিদ্ধান্ত সবার মেনে নেওয়া উচিত। রংপুর মেডিকেল কলেজের উন্নয়নে, হাসপাতালের উন্নয়নে মাহফুজার রহমানের দরকার। কিন্তু তাকে উৎখাত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে একটি চক্র। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলু বলেন, ‘মাহফুজার রহমান রংপুরের সন্তান। যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকার তাকে পদোন্নতি দিয়েছে। এতে একটি স্বার্থান্বেষী মহল উঠে পড়ে লেগেছে। মাহফুজার রহমান অধ্যক্ষ থাকলে তারা অনিয়ম-দুর্নীতি করতে পারবে না। তাই তাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে সরাতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র, মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
প্রসঙ্গত গত ২৯ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শাহ মো. সারোয়ার জাহানকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি করা হয়। সেই সঙ্গে কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাহফুজার রহমানকে অধ্যক্ষ এবং সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ার হোসেনকে উপাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ও অধ্যাপক পদে পদায়ন করা হয়। এরপর দিনই বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী, ছাত্র-জনতার ব্যানারে নবনিযুক্ত অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবি তুলে বিক্ষোভ করা হয়। এ দিন অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।আন্দোলনের কারণে নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ এখনো রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগদান করতে পারেনি।