এবার প্রকাশ্যে এলো জাবি ছাত্রশিবির, যা বললেন সভাপতি
দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার প্রকাশ্যে এলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রশিবির। আজ মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সভাপতি, সেক্রেটারি ও প্রচার সম্পাদকের নাম প্রকাশ করেছে তারা।
সভাপতি হারুনুর রশিদ রাফি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৬ ব্যাচ (২০১৬-১৭ সেশন), সম্পাদক মহিবুর রহমান মুহিব বাংলা বিভাগের ৪৭ ব্যাচ (২০১৭-১৮ সেশন) এবং প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকি দর্শন বিভাগের ৪৭ ব্যাচের (২০১৭-১৮ সেশন) শিক্ষার্থী৷
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে সুস্থ ধারার রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে ছাত্রশিবির সর্বদা প্রস্তুত। আবাসিক হলগুলোতে কোন ধরনের দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, মাদকের বিস্তার রোধে ছাত্রশিবির অঙ্গীকারবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ আনয়ন, গবেষণামুখী শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তবায়ন, সুস্থ ধারার সংস্কৃতির বিকাশ ও নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে ছাত্রশিবির কাজ করে যাবে। ছাত্রশিবির চায় ছাত্র সংসদ কেন্দ্রীক সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে আসুক।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির বিষয়ে নেতারা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ছাত্রশিবিরকে আদর্শিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে নিষিদ্ধের একটি বয়ান তৈরি করে এসেছে। আদতে এই বয়ানের কোনো সত্যতা নেই। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৪২তম সভায় শিবির নিষিদ্ধের প্রস্তাবনা আসলেও এরকম কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি বরং সভার সিদ্ধান্ত ছিল ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাবহির্ভূত বিধায় এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব নয়’। কোনো মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে না। ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধকরণ ও ট্যাগিং রাজনীতি মূলত ফ্যাসিবাদ কায়েমের সহায়ক শক্তি হিসেবেই কাজ করেছে।’
ক্যাম্পাসে সকল দলের অংশগ্রহণে সুস্থ ধারার রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে শিবির নেতারা বলেন, গত ১৫ বছরে ধরে আওয়ামী দুঃশাসনের দরূন রাজনীতির সংজ্ঞাই পাল্টে গেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের রাজনীতি চাই। চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার আলোকে চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক সংস্কার হোক। ছাত্ররাজনীতির এ যৌক্তিক সংস্কারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হারুনুর রশিদ রাফি আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দীর্ঘ প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সিন্ডিকেটের মূল সিদ্ধান্তকে বিকৃত করে ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের অসত্য বয়ানকে প্রচার করে আসছিলো, যা ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ছিল। জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটকে আঁকড়ে ধরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সবার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সুস্থ ধারার ক্যাম্পাস বিনির্মাণে সচেষ্ট থাকবে।’