রংপুরে যে হুঁশিয়ারি দিলেন সারজিস আলম
স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে আবারও রাজপথে দেখা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। আজ শনিবার দুপুরে রংপুর মহানগর পুলিশের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘এমন বাংলাদেশ চাই না যে একটি দল ক্ষমতায় এসে অন্যদের শোষণ করবে। ছাত্র-জনতার রক্তে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, আবু সাঈদ ভাই যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছে সেই বাংলাদেশ তৈরির পথে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না। কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে আবারও রাজপথে দেখা হবে।’
ছাত্র-জনতা আন্দোলনের আহত ও নিহতদের পরিবারের করানো মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে পুলিশের যে ইমেজ সংকট তা মাথায় না রেখে এখনো কিছু পুলিশ বিভিন্ন মোড়কে কিছু দলের বা গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছে। দেশে মিথ্যা মামলার মাধ্যমে ব্যবসা হচ্ছে। কোনো কোনো পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে আছে। কেউ আবার পরবর্তীকালে যাতে সুবিধা নেওয়া যায় সে চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘যেসব পুলিশ সদস্য অন্যায়ভাবে আন্দোলনে আমার ভাইকে হত্যা করেছে তাদের বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বদলি ছাড়া খুনের জন্য পুলিশের আর কোনো শাস্তি হয় না। অপরাধের জন্য শুধু বদলিই পুলিশের শাস্তি হতে পারে না। কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে আমরা যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি আগামী দিনে সেখানে এর চেয়ে আরও বড় অভ্যুত্থান হবে ও বেশি রক্তপাত ঘটবে।’
সারজিস আলম বলেন, ‘বিগত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বৈধতা দেওয়ার জন্য যারা তাদের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং যারা সংসদ সদস্যের চেয়ারে বসে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে তারা যে দলেরই হোক না কেন সবাই ফ্যাসিবাদের দোসর।’
এর আগে, সকালে পুলিশের আইজিপি ময়নুল ইসলামের সফরসঙ্গী হয়ে পীরগঞ্জের বাবনপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সুধী সমাবেশ শেষে বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হন তিনি।
এদিকে, সারজিস আলমের রংপুর আসার খবরে লাঠি হাতে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করে রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতারা।
আরও পড়ুন:
সাকিবকে নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের
বিক্ষোভ মিছিল শেষে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, পুলিশের ছত্রছায়ায় রংপুরে এসে সারজিস প্রোগ্রাম করে গেল। দেশের সংবিধান অনুযায়ী পুলিশ প্রটোকল পাবেন কারা, সেটা সবাই জানে। কিন্তু এখন আমরা কী দেখছি? হাসনাত-সারজিসের মতো কুলাঙ্গারকে কেন প্রটোকল দিতে হবে। যেখানে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশি সেবা যাচ্ছে না সেখানে তাদের প্রটোকল দেওয়ার কারণ কী? জাতীয় পার্টিকে সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা ডাকবে কি ডাকবে না সেটা তার ব্যাপার। এটা সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়ে আসবে। কিন্তু আমরা কি দেখলাম? হাসনাত-সারজিসের মতো কুলাঙ্গারের কথায় সরকার যদি জাতীয় পার্টির সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করে সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদেরও অনেক অবদান রয়েছে।’