যৌন হয়রানির অভিযোগে রিকশাচালককে পুলিশে দিলেন শিক্ষার্থীরা

রাবি প্রতিবেদক
০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:৫৬
শেয়ার :
যৌন হয়রানির অভিযোগে রিকশাচালককে পুলিশে দিলেন শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের সামনে মাস্টারবেশন করা, রিকশায় ওঠা নারী শিক্ষার্থীদের দিকে বাজেভাবে তাকানো ও খারাপ ভাষায় কথা বলার অভিযোগে এক রিকশাচালককে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। অভিযুক্ত রিকশা চালকের নাম মমিন। তার বাড়ি নগরীর বেলপুকুরের জামিরা এলাকায়।

আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে প্রক্টরের উপস্থিতিতে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয় ।

শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানান, এই রিকশাচালক নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করেন। তিনি বাজে ভাষায় কথা বলেন। তার তাকানোর ভঙ্গিও অনেক বাজে। এমন কি তিনি শিক্ষার্থীদের সামনে মাস্টারবেশন করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, এই রিকশাচালক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আগে টুকিটাকিতে নারী শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে মাস্টারবেশন করতেছিল। যার কারণে তাকে কিছু মানুষ মারধর করেছিল। তারপর তাকে বলা হয়েছিল, তিনি যেন আর ক্যাম্পাসে না আসেন। কিন্তু তিনি এরপরও ক্যাম্পাসে আসেন।

তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন আসি, আমি এসব করি না।’ কিন্তু তাকে বিশ্বাস করা যায় না। তার কাছে মেয়েরা নিরাপদ না। যেসব মেয়েরা তার বিষয়ে জানে না, তারা তার রিকশায় উঠে বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন।’

আরেক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘ঘটনানাটি নাট্যকলা বিভাগের কিছু আপুদের সঙ্গে ঘটেছে। আমরা তাকে নিষেধ করে দিয়েছি, যাতে সে ক্যাম্পাসে না আসেন। তাও তিনি আসতেছেন। আমরাতো তার কাছে নিরাপদ না। তিনি নারী শিক্ষার্থীদের দিকে খুব বাজেভাবে তাকান। যারা তাকে চিনে না, তারা তার রিকশায় উঠে যেতে পারে। তাই আমরা চাই, তিনি যেন ক্যাম্পাসে আর না আসেন। আর এজন্যই তাকে আজ আমরা ধরে আটক করেছি।’

তবে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত রিকশাচালক মমিন। তিনি বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে আমার জানা নাই। আমি আজই জানতে পারলাম, আমি এসব করেছি। মানুষের কাছ থেকে শুনেছি।’

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীরা ওই রিকশা চালকের বিরুদ্ধে আরও আগেই আমার কাছে অভিযোগ করেছিল। আমরা তাকে আরও আগে বিভিন্নভাবে ওয়ার্নিং করেছিলাম। কিন্তু আজও সে একই অপরাধে ধরা পড়েছে। আমরা চাচ্ছি, সে যেন আর কোনোদিন ক্যাম্পাসে না আসতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই না, সে এসে ক্যাম্পাসে আমাদের শিক্ষার্থীদের বিরক্তির কারণ হোক। তাই পুলিশ প্রশাসনকে ফোন দিয়েছি। তার বিরুদ্ধে যে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তারা তা নিবে। নারী শিক্ষার্থীরা আমার কাছে যেসব অভিযোগ দিয়েছে, তা আমি মুখে বলতে পারব না। শিক্ষার্থীরাও মুখে বলতে পারেনি, আমাকে ছবি পাঠিয়েছে। ভাষাগুলো খুবই কুৎসিত।’