ইতালি যাওয়ার পথে নৌকা ডুবে নিখোঁজ ২ ভাই
লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হয়েছেন মিলন মুন্সি (৩৫) ও আল-আমিন (৩০) মুন্সি নামে দুই ভাই। আজ বুধবার সকালে তাদের নিখোঁজ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে।
নিখোঁজ মিলন ও আল-আমিন মুন্সি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর এলাকার পশ্চিম পূয়ালী গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী পরিবার জানিয়েছে, সংসারের হাল ধরার জন্য ৬ মাস আগে অবৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া যান মিলন ও আল-আমিন মুন্সি। প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে দুই ভাইয়ের সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানতে পেয়েছেন মিলন ও আল-আমিন লিবিয়ায় দালালদের গেমস ঘরে অবরুদ্ধ থেকে বের হয়ে একটি প্লাস্টিকের বোডে (নৌকা) করে ভূমধ্যসাগর পারি দিয়ে ইতালি রওনা দেন। এ সময় হঠাৎ করে ঐ বোডে তলা ফেটে সাগরের মাঝখানে ডুবি গিয়ে বেশ কিছু লোকজনসহ মিলন ও আল-আমিন মুন্সি মারা যায় বলে তাদের গ্রামের বাড়িতে খবর আসে।
আরও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু
ভুক্তভোগী নিখোঁজ মিলন ও আল আমিনের বাবা সিরাজ মুন্সি বলেন, ‘গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফরহাদ মাতুব্বর আমার দুই ছেলেকে ইতালি পাঠানোর জন্য আমাদের কাছ থেকে মোট ৩০ লাখ টাকা নেয়। প্রায় ৬ মাস ধরে আমার দুই ছেলেকে সে কোথায় পাঠিয়েছে তার কোন খোঁজখবর দিতে পারেননি। তার কাছে বারবার আমার দুই ছেলের খোঁজখবর জানতে চাইলে সে কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। ফরহাদ মাতুব্বর আমার দুই ছেলের কোনো খোঁজ না দিয়ে এই পর্যন্ত বিভিন্ন তালবাহানা করে আসছে। আমার দুই ছেলেকে মৃত্যু অথবা জীবিত যেভাবেই হোক ফেরত চাই। আমার আর কিছু চাওয়া নেই।’
নিখোঁজ দুই ভুক্তভোগীর খালাতো ভাই মানিক বলেন, ‘মিলন ও আল-আমিন লিবিয়া গেমস ঘর থেকে বের হয়ে একসঙ্গে ভূমধ্যসাগর পথে তিনটি বোড পাড়ি দিয়ে রওনা দেয়। পথে তাদের বোডের তলা ফেটে ডুবে গিয়ে বোডে থাকা সকলে নিখোঁজ হয়েছেন। ওই বোডে আমার দুই খালাতো ভাইও ছিল। তাদের মৃত্যু হওয়ার খবরটি পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। মাদারীপুরের আরেক যুবক দেশে এসে আমাদের জানিয়েছে। সে অন্য বোডে ছিল ধরা খেয়ে দেশে ফিরে এসেছে। সে দেশে ফিরে আমাদের জানিয়েছে মিলন আর আল আমিন আর নেই।’
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মো.ফরহাদ মাতুব্বর বলেন, ‘নিখোঁজ হওয়া দুই ভাইকে দ্রুত দেশে আনা হবে। আমি আগামী ১০ তারিখ পর্যন্ত ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে সময় নিয়েছেন।’
ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিষটি জেনেছি। ভুক্তভোগীর বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়েছি। মিলন ও আল-আমিনের মৃত্যুর খবরটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’