আতঙ্কে একদল শিল্পী
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে বিভক্ত শোবিজের শিল্পীরা! আন্দোলনের উত্তাল সময়, বিগত সরকারের আমলে (শেখ হাসিনা) যখন শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন ও নির্বিচারে গুলি চালানো হয় তখন একদল শিল্পী সমাজ প্রতিবাদী হয়ে নামেন রাজপথে। তারা কথা বলেন সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে আরেক দল শিল্পী সমাজ ছুটে যান বিটিভি’সহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা দেখতে।
অবশেষে ছাত্র-জনতার এক দফা দাবির মুখে গেল ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশের জনগণ বিজয় উল্লাসে মেতে উঠলেও গা ঢাকা দেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতাকর্মীরা। সঙ্গে আড়াল হয়েছেন একদল শিল্পী সমাজও। যারা সমর্থন দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা সরকারকে। এই বিভক্তির কারণে শোবিজ অঙ্গনে একধরনের স্থবিরতা চলছে। থেমে গেছে শোজিকের অনেক কাজও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত একটি সুন্দর সমাধানের পথ খুঁজছেন অভিনয়শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজকসহ কলাকুশলীরা। আর বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথাও বলছেন সিনিয়র শিল্পীরা। খুব শিগগিরই একসঙ্গে বসতে যাচ্ছেন তারা। তবে এই সভায় থাকবে না রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কোনো শিল্পী।
আরও পড়ুন:
স্ত্রীর কবরের পাশে পরীর নানা সমাহিত
বিষয়টি নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম বলেন, ‘কিছু অভিনয়শিল্পী অতিরিক্ত করেছেন, তারা শিল্পীসুলভ আচরণ করেননি। শিল্পীর যে ভাবমূর্তি ছিল, সেটা তারা নষ্ট করেছেন। এই মুহূর্তে শিল্পীরা নিজেদের নিরাপত্তাহীন ভাবছেন। অনেকেই আতঙ্কে রয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি শিল্পীরা বড় কোনো ক্রিমিনাল না। এখন নতুন করে ভাবনার সময় এসেছে। যে কারণে আমরা দ্রুত সবার কথা শুনতে চাই। সবার সঙ্গে বসব। তবে সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে অতিরিক্ত তৎপর কোনো শিল্পীকে এখানে তারা দেখতে চান না। আমরা চাই নিজেদের মধ্যে ভুল-ঝাবুঝির অবসান হোক। আমরা চাই না কোনো শিল্পী আতঙ্কে থাকুক।’
আরও পড়ুন:
গণভবনে ডাক পেলেন আ. লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা
এদিকে, ছোটপর্দার সব সংগঠনের প্রতিনিধি মিলে তৈরি ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনের (এফটিপিও) চেয়ারম্যান অভিনেতা মামুনুর রশীদ বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে নানা ধরনের মামলা দেওয়া হচ্ছে। এতে শিল্পীরা যেমন আতঙ্কে রয়েছেন, তেমনি কার্যক্রম স্থবির হয়ে যাচ্ছে। সুনির্দিষ্টভাবে যদি কারও নামে কোনো অভিযোগ থাকে, সেটা ভিন্ন কথা। সেগুলো নিয়ে আমাদের কোনো কথা নাই। কিন্তু দীর্ঘদিন আগের কোনো একটি ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা, আমরা চাই না। এসব মামলার সত্যতা কী? শিল্পীরা কেন কাউকে হত্যা করতে যাবেন? এমন মামলায় শিল্পীরা ভয় পাচ্ছেন, বিব্রত হচ্ছেন, ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। এ জন্যই আমরা বসার চেষ্টা করেছি।’