আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে রিট খারিজ চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ
ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে করা রিট আদালতের কাছে সরাসরি খারিজ চেয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহবুবুল উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রিটের ওপর শুনানিতে অংশ নিয়ে এ দাবি জানানো হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। রিটের পক্ষে রিটকারী আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া শুনানি অংশ নেন।
আদালতের উদ্দশ্যে শুনানিতে রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ বা নিবন্ধন বাতিল করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য নেই। সংবিধানে সংগঠন ও রাজনৈতিক দল পরিচালনার যে স্বাধীনতা রয়েছে, এই সরকার সেটিতে বিশ্বাস করে। আর বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সঙ্গে জড়িতদের অন্যায় অবিচারের বিচার আইন আদালতের মাধ্যমে হবে। সেটার জন্য কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা সমীচীন নয়।’
আরও পড়ুন:
গণভবনে ডাক পেলেন আ. লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা
এ সময় রাষ্ট্রের এই প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘আওয়ামী লীগে অনেক ভালো নেতা কর্মী আছেন, যারা তাদের আদর্শে বিশ্বাস করেন। তাই তাদের সে বিশ্বাসের দল নিষিদ্ধ করা আদালতের কাজ নয়।’
শুনানিতে তিনি আরও বলেন, ‘বিচারপতি তোমার বিচার করবে কারা, জেগেছে আজ জনতা’ এমন স্লোগানের প্রেক্ষাপটে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে যে নতুন স্বাধীনতা এসেছে, সেখানে সবার বাকস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হতে হবে। তাই রাজনৈতিক দল পরিচালনার স্বাধীনতা এসময় বন্ধ হতে পারে না।’
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবে বিচার বিভাগে কোনো আক্রমণ হলে সেটি আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণেরই বিষয়। তাই কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা নিয়ে মাঠের রাজনীতি আদালতে টেনে আনা ঠিক না। আর কোনো রাজনৈতিক দল এই রিট নিয়ে আদালতে আসেনি।’
আরও পড়ুন:
জোটের ভাগে অনেক নেতা নৌকা হারাবেন
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল রিটটি খারিজ চেয়ে হাইকোর্টকে বলেন, ‘এই রিটটি যাদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে, সেই আওয়ামী লীগকে রিটে পক্ষভূক্ত করা হয়নি এবং কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। এই রিটের কোনো লোকাস স্ট্যান্ডই নেই। এই রিট মেনটেনেবল নয়। তাই রিটকারিকে জরিমানা (কস্ট) করার আবেদন করছি।’
এক পর্যায়ে রিটকারি আইনজীবী শুনানির জন্য আরও সময় চাইলে হাইকোর্ট আগামী ১ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
গত ১৯ আগস্ট ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়।
আরও পড়ুন:
চীনা অ্যাপের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব মানুষ
মানবাধিকার সংগঠন সারডা সোসাইটির পক্ষে নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া রিটটি করেন। এই রিটে যেসব প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনার নামে রয়েছে সেগুলোর নাম পরিবর্তনও চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া রিটে দেশ সংস্কারের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সর্বনিম্ন তিন বছর চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বিদেশে পাচার করা ১১ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের বদলি চাওয়া হয়েছে।