‘আম্মাজান’র পর কেন আর অভিনয় করেননি শবনম

বিনোদন প্রতিবেদক
১৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৬
শেয়ার :
‘আম্মাজান’র পর কেন আর অভিনয় করেননি শবনম

উপমহাদেশের অন্যতম মহাতারকা শবনম। যার আসল নাম ঝর্ণা বসাক। ১৯৪৬ সালের আজকের দিনে (১৭ আগস্ট) ব্রিটিশ-ভারতের ঢাকায় জন্মেছিলেন বাংলা  সিনেমার এই হার্টথ্রোব। প্রখ্যাত নির্মাতা এহতেশামের ভাই মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ সিনেমার মাধ্যমে ১৯৬১ সালে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে শবনমের। এ সিনেমাতেই তিনি ‘শবনম’ নাম ধারণ করেন। ‘হারানো দিন’ সিনেমার ‘আমি রূপনগরের রাজকন্যা, রূপের জাদু এনেছি’ গানের সুবাদে রাতারাতি জনপ্রিয়তা লাভ করেন শবনম।

বাংলা সিনেমা দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও স্বাধীনতার আগে উর্দু সিনেমাতে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে সব পুরস্কার ও স্বীকৃতিও অর্জন করেন এই অভিনেত্রী। ১৯৫৮ সালে বাংলা ভাষায় ক্যারিয়ার শুরু করা এই অভিনেত্রীকে সবশেষ দেখা গেছে ১৯৯৯ সালে ‘আম্মাজান’ সিনেমায়। কাজী হায়াতের এই সিনেমায় একজন মায়ের চরিত্রে শবনমের অভিনয় ছিলে এক কথায় অনবদ্য। সেখানে উপস্থিতি অভিনয় যেমন দর্শককে কাঁদিয়েছিল, তেমনই এটিও হয়েছিল ব্যবসাসফল।

আক্ষেপের বিষয়, এত জনপ্রিয়তা পেলেও এই কিংবদন্তিকে আর কোনো বাংলা সিনেমায় পাওয়া যায়নি। কেন? অনেকেই মনে করেন কোনো এক অভিমানে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি।

আসলেই কি তাই? বছর দুয়েক আগে বছর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ইফতার পার্টিতে হাজির হয়ে তিনি জানিয়েছিলেন সেই অজানা কথা।

শবনমের ভাষায়, ‘“আম্মাজান” করার পর ভালো কোনো চরিত্র পায়নি। তাই ক্যামেরার সামনেও দাঁড়াইনি। ইচ্ছা থাকলেও মনের মতো চিত্রনাট্য না পাওয়াতে আর কাজ করা হয়নি।’

সে সময় তিনি এও জানান, সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল শারীরিক অসুস্থতা। তাই আর কাজ করা হয়নি।

ছয় দশকের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে শবনম পাকিস্তানে সর্বোচ্চ তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ১৩বার সর্বোচ্চ নিগার জয় করে অনন্য রেকর্ড গড়েছেন। দেশটির সিনেমায় তার অবদান এতটাই যে, সেখানে ‘মহানায়িকা’ বলা হয় তাকে।

শবনম শৈশবেই বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শিখেছেন। সে সময় একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবেও বেশ সুপরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। সেখানেই একটি নৃত্যের অনুষ্ঠানে নির্মাতা এহতেশাম তার নাচ দেখে ‘এদেশ তোমার আমার’ সিনেমায় নৃত্যে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। এহতেশামের আরও কিছু সিনেমায় অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন শবনম। তার পাশাপাশি পরিচালক মুস্তাফিজের নজর কাড়তে সক্ষম হন অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করে।

শবনম অভিনীত উল্লেখযোগ্য বাংলা সিনেমার মধ্যে রয়েছে, ‘সহধর্মীনি’, ‘সন্ধি’, ‘শর্ত’, ‘রাজধানীর বুকে’, ‘রাজা সন্ন্যাসী’, ‘নাচের পুতুল’, ‘নবারুণ’, ‘জুলি’, ‘জোয়ার ভাটা’, ‘কারণ’, ‘এদেশ তোমার আমার’।

অন্যদিকে উর্দু সিনেমার মধ্যে রয়েছে, ‘সমন্দার’, ‘সাগর’, ‘হামদোনো’, ‘রিশতা’, ‘মিস হিপ্পি’, ‘ভুল’, ‘বন্দিস’, ‘বেগানা’, ‘পাকিজা’, ‘পেহজান পয়সে’ ইত্যাদি।