শিক্ষার্থীদের কাঁধে ভর করে স্বার্থান্বেষী মহল অপচেষ্টা চালাচ্ছে: ঢাবির নীল দল

ঢাবি প্রতিবেদক
০১ আগস্ট ২০২৪, ২২:২২
শেয়ার :
শিক্ষার্থীদের কাঁধে ভর করে স্বার্থান্বেষী মহল অপচেষ্টা চালাচ্ছে: ঢাবির নীল দল

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকা শিক্ষার্থী ও তরুণ সমাজের কাঁধে ভর করে একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থক শিক্ষকদের প্ল্যাটফর্ম নীল দল।

আজ দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য জানান নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলী।

আমজাম আলী লিখিত বক্তব্যে জানান, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকা শিক্ষার্থী এবং তরুণ সমাজের কাঁধে ভর করে একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী চক্র তাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য প্রতিনিয়ত অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই আন্দোলনের এক পর্যায়ে অপ্রত্যাশিতভাবে শিক্ষার্থীসহ অনেকেই নিহত এবং আহত হয়েছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রাণহানির ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নীলদল গভীরভাবে শোকাহত এবং নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছে। একই সঙ্গে নিহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে। পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি সহমর্মিতা এবং দ্রুত সুস্থতা কামনা করছে।’

আমজাদ আলী জানান, ‘ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যেকোনো নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার সম্পর্কিত যৌক্তিক দাবিসমূহের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নীলদল বরাবরই ইতিবাচক অবস্থানে থেকেছে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই আন্দোলন শুরুতে শান্তিপূর্ণ থাকলেও পরবর্তীকালে সহিংস হয়ে ওঠে, যা গভীর উদ্বেগের। এই আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে কেউ কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও রাজপথে স্বাধীনতাবিরোধী শ্লোগান উচ্চারণ করেছে, যা নিন্দনীয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনায় নিয়ে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের ২১ জুলাই ২০২৪ এর রায় কোটা সংস্কার দাবিকারী শিক্ষার্থীদের অনুকূলে হওয়ায় নীলদল সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার এই রায়কে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করায় নীলদল সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি তরুণ প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য সরকারকেই অগ্রণী ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসতে হবে। যেকোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে যথাযথ সম্মান দেখিয়ে সুবিবেচনা এবং বিচক্ষণতার সঙ্গে সমাধানের পথ নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি সরকার এই আন্দোলনে নিহত এবং আহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার যে দ্বার উন্মোচন করেছে তা অব্যাহত রাখতে হবে। নিরাপরাধ ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং হয়রানি না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া প্রাণহানির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস ও অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িত সকল অপরাধীর তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এ আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের অবিলম্বে শান্তির আওতায় আনতে হবে; দ্রুততম সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে হবে; আবাসিক হলসমূহে বৈধ ও নিয়মিত শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে নীল দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রফিক শাহরিয়ার, ঢাবি শিক্ষক সমিতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ড. মো. আবদুর রহিম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষগণ সহ প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।