রোদে যাওয়ার আগে
নানা প্রয়োজনে আমাদের বাইরে যেতেই হয়। আর বাইরে গেলে রোদ, ধুলো-দূষণ থেকে মুক্তি নেই। ত্বকে রোদে পোড়া দাগ একটা বড় সমস্যা। এ সমস্যা এড়াতে ঘরের বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন, সানব্লক লাগানো জরুরি। কিন্তু আপনার জন্য কোন ধরনের সানস্ক্রিন দরকার এবং তার ব্যবহারবিধি, রোদে পোড়া ত্বকের যত্ন ইত্যাদি বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন। বিস্তারিত জানাচ্ছেন লাবণ্য লিপি
রোদে গেলেই ত্বকে রোদে পোড়া দাগ বা ট্যানিং অবধারিত। এমনকি রান্নাঘরে চুলার তাপে, গাড়িতে বসে থাকলেও ত্বক ট্যান হয়। রোদে পুড়লে ত্বক শুধু ট্যানই হয় না। আরও কিছু সমস্যাও দেখা দেয়। যেমন- ছোপ দাগ, বলিরেখা, ত্বক খসখসে হওয়াসহ নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ থেকে রক্ষা পেতে সানস্ক্রিন, সানব্লক ব্যবহার করা অতিজরুরি, বলছিলেন রূপ বিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন। তিনি বলেন, এখন অনেকেই জানেন রোদে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু সেটা ব্যবহারের সঠিক নিয়ম ও প্রয়োজন অনুযায়ী প্রডাক্টটা অনেকেই বেছে নিতে পারেন না। আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী মোটামুটি ৩০ থেকে ৫০ এসপিএফ সানস্ক্রিন হলেই হবে। এসপিএফ হচ্ছে সান প্রটেকশন ফ্যাক্টর। সানস্ক্রিন বেছে নেওয়ার সময় অবশ্যই আপনি কতটা সময় রোদে থাকবেন সেটা বুঝে নিতে হবে। আপনি যদি ঘণ্টাখানেক সময় বাইরে থাকেন তা হলে এসপিএফ ৩০-ই যথেষ্ট। আর রোদে বের হওয়ার অবশ্যই ১৫-২০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। কারণ সানস্ক্রিন ত্বকে শোষণ হতে এই সময়টুকু লাগবে। আবার অনেকেই বাইরে যাওয়ার আগে একটুখানি সানস্ক্রিন লাগিয়ে বের হয়ে যান। তার পর বলেন, এর পরও আমার ত্বকে পোড়া দাগ হলো কেন! একটা কথা মনে রাখতে হবে, সানস্ক্রিনের কার্যক্ষমতা থাকে মোটামুটি চার ঘণ্টা। তার মানে চার ঘণ্টা পর প্রয়োজন হলে আবার সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। অনেকেই জানতে চান সানস্ক্রিন এবং সানব্লকের মধ্যে পার্থক্য কী? সানস্ক্রিন ত্বককে সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে। সানস্ক্রিন ত্বকের গভীরে ঢুকে কাজ করে। সানব্লক কাজ করে ত্বকের ওপরে। ত্বকে লালচে ভাব, পোড়া ভাব হলে সানব্লক লাগাতে পারেন। অনেক বেশি সময় বাইরে থাকলে সানস্ক্রিনের ওপরে সানব্লকও লাগাতে পারেন। সানস্ক্রিন লাগানোর সময় পরিমাণের দিকেও খেয়াল রাখুন। দু-তিন ফোঁটা লাগলেই হলো, এমন যেন না হয়। মুখ, হাত, গলায় পরিমাণ বুঝে লাগান। তবে ত্বকে সরাসরি সানস্ক্রিন লাগাবেন না। তার আগে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। আপনি যে ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার লাগান সেই ব্র্যান্ডেরই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। তা হলে সেটা সহজে আপনার ত্বকের সঙ্গে মানিয়ে যাবে।
প্রাকৃতিক উপকরণে
ত্বকের যত্ন
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
অনেকেই কেমিক্যাল প্রডাক্ট ব্যবহার করতে চান না। আবার যাদের ত্বকে রোদে পোড়া দাগ হয়েছে তারা চাইলে ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন। তবে একদিন একটা প্যাক লাগিয়ে ভাববেন না উপকার পাচ্ছেন না! মনে রাখবেন, ধৈর্য নিয়ে নিয়মিত পরিচর্যা করলেই ভালো ফল পাওয়া যায়।
হ ত্বকের রোদে পোড়া দাগ দূর করতে টক দই খুবই উপকারী। টক দই ও মধু মিশিয়ে লাগান। বিশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
হ অ্যালোভেরাও ট্যান দূর করে। অ্যালোভেরার সঙ্গে মধু মিশিয়ে লাগান। অ্যালোভেরার জেলও ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
হ পাকা পেঁপে চটকে ত্বকে লাগান। এতে ত্বকের ছোপ দাগ দূর হবে। ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হবে।
হ লেবুর রসও ত্বকের পোড়া দাগ দূর করে। তবে লেবুর রস সরাসরি ত্বকে লাগাবেন না। যেমন ও মধুর সঙ্গে মিশিয়ে লেবুর রস ব্যবহার করুন।
হ রোদে পায়ের পাতাও পুড়ে দাগ হয়ে যায়। তাই যত্ন নেওয়ার সময় হাত ও মুখের সঙ্গে পায়েও প্যাক লাগাবেন।
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?
হ পাকা টমেটোর রস প্রাকৃতিক ব্লিচের কাজ করে। একটা পাকা টমেটো থেঁতো করে তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে মুখে, হাতে, গলায় লাগিয়ে রাখুন বিশ মিনিট। শুকিয়ে টান লাগলে পানির ছিটে দিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। এটা নিয়মিত করলে উপকার পাবেন।