টকশোতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের উসকানি দেওয়া হচ্ছে: প্রধান বিচারপতি

অনলাইন ডেস্ক
১০ জুলাই ২০২৪, ১৫:৪৭
শেয়ার :
টকশোতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের উসকানি দেওয়া হচ্ছে: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘টকশোতে প্রতিনিয়ত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের উসকানি দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বুঝে বা না বুঝে আন্দোলন করতেই পারেন। তাদের মনে ক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বোঝানোর যাদের দায়িত্ব, উনারা তা পালন করতে পারছেন না।’

আজ বুধবার সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোটা বাতিল চেয়ে করা আবেদনের শুনানিতে এসব কথা বলেন তিনি।

টকশোর আলোচকদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘টকশোতে যারা কথা বলছেন তাদের কথা শুনে মনে হয় টকশোকারদের চেয়ে জ্ঞানী-গুণী আর কেউ নেই। আমরা যারা বিচারকের আসনে আছি তারা কিছুই জানি না।’

ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেভাবে আন্দোলন করছে সেটা অ্যাপ্রিশিয়েট করা যায় না। হাইকোর্ট একটা রায় দিয়েছেন। সেই রায় সঠিক হয়েছে কি না, সেটা দেখার জন্য আপিল বিভাগ রয়েছেন। আপিল বিভাগ তো হাইকোর্টের রায় বাতিল বা সংশোধন করতে পারেন। আবার বহালও রাখতে পারেন। শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্য আদালতে তুলে ধরতে পারেন। এটাই তো যথাযথ ফোরাম।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি আন্দোলন করে রায় পরিবর্তন হয় না। রায় পরিবর্তন আদালতেই করতে পারেন।’

আজকের শুনানি শেষে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত।

আজ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে দুই ছাত্র আবেদন করেন। তারা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া ও উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান। পরে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতির আদালত।

এর আগে ৪ জুলাই সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

এদিকে, কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুর্নবহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজও তারা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন।