যবিপ্রবির ৯ ছাত্রকে আজীবন বহিষ্কার

চাকরি প্রার্থীদের অপহরণ এবং একজন আবাসিক ছাত্রকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বিভিন্ন বিভাগের ৯ ছাত্রকে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়াও আজীবন বহিষ্কৃত ৯ জনসহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ১০০তম (বিশেষ) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আজীবন বহিষ্কৃত ছাত্ররা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্র মো. বেলাল হোসেন, ফার্মেসী বিভাগের জি এম রাইসুল হক রানা, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের নৃপেন্দ্র নাথ রায়, মুশফিকুর রহমান, মো. আবু বক্কার, রেদওয়ান আহমেদ জিসান, মো. বিপুল শেখ, মো. আমিনুল ইসলাম ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মো. রায়হান রহমান রাব্বী।

এছাড়া শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের ফাহিম ফয়সাল লাবিব, সোহেল রানা, ইছাদ হোসেন এবং আশিকুজ্জামানের (লিমন) ছাত্রত্ব না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের অনেকে ভার্চুয়ালি এবং সশরীরে সভায় অংশ নেন। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনের পর তা নিয়মানুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়। পরে ডিসিপ্লিনারি কমিটির সুপারিশ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উপস্থাপন করার পর তা ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভার শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহের বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বক্তব্য দেন।

রিজেন্ট বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গতবছরের ৭ ডিসেম্বর লিফট অপারেটরে চাকরি প্রার্থীদের অপহরণের ঘটনায় প্রমাণিত হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করায় যবিপ্রবির ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্র মো. বেলাল হোসেন, ফার্মেসী বিভাগের জি এম রাইসুল হক রানা, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের নৃপেন্দ্র নাথ রায়, মুশফিকুর রহমান, ফাহিম ফয়সাল লাবিব ও মো. আবু বক্কারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ফাহিম ফয়সাল লাবিবের বর্তমানে ছাত্রত্ব নেই। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর ও আবাসিক হলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।   

বোর্ড সভায় আরও বলা হয়, গত ৪ জুন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শাহরিন রহমানকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় যবিপ্রবির শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের সোহেল রানা, রেদওয়ান আহমেদ জিসান, মো. বিপুল শেখ, ইছাদ হোসেন, মো. আশিকুজ্জামান (লিমন) ও মো. আমিনুল ইসলাম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মো. বেলাল হোসেন ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মো. রায়হান রহমান রাব্বীকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সোহেল রানা, ইছাদ হোসেন এবং আশিকুজ্জামানের (লিমন) ছাত্রত্ব না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর ও আবাসিক হলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।