ঢাবির নকল আইডি কার্ড ব্যবহার করতেন সাজেদুর
দীর্ঘদিন ধরে নকল আইডি কার্ড ব্যবহার করে নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইন্সটিটিউটের ছাত্র বলে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন সাজেদুর রহমান। মিথ্যা পরিচয়ে হয়েছেন বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন ইউনিভার্সিটি, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন অফ সোনাতলা (উমেসাস)-এর সাধারণ সম্পাদক। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসা তার নকল আইডি কার্ডের ছবি আমাদের সময়ের হাতে এসেছে।
জানা যায়, সাজেদুর রহমান শ্যামলী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র। গত ২৪ মে উমেসাসের সাবেক আহ্বায়ক সৌমিক সোহান ও সাবেক সদস্য সচিব ওমর ফারুক তাকে এক বছরের জন্য সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করেন। নির্বাচিত হওয়ার আগে নিজেকে ঢাবির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র এবং ঢাবির বিভিন্ন সংগঠনে যুক্ত বলে পরিচয় দেন। সন্দেহ এড়াতে তৈরি করেন ঢাবির নকল আইডি কার্ড। এছাড়াও ঢাবির ছাত্র পরিচয় দিয়ে টিউশনি করান তিনি।
এদিকে, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইন্সটিটিউটের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের ইনস্টিটিউটে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে তিন বিভাগ মিলিয়ে মোট শিক্ষার্থী ১৫০ জন। আমাদের ব্যাচের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সাজেদুর রহমান নামের কোনো ছাত্র নেই। তিনি ভুয়া পরিচয়ে সবাইকে বোকা বানিয়েছেন।’
সংগঠনের সাবেক আহ্বায়ক সৌমিক সোহান জানান, সংগঠনের সকলের কাছে সাজেদুর নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র বলে পরিচয় দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নকল আইডি কার্ড দেখিয়েছেন। কিন্তু তখন আইডি কার্ড আসল নাকি নকল তা যাচাই করা হয়নি। যেহেতু তিনি ঢাবির কার্ড নকল করার মত জালিয়াতি কাজ করেছে, সেহেতু তদন্ত সাপেক্ষে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার ও তার বিরুদ্ধে ঢাবির কার্ড নকল সংক্রান্ত জালিয়াতি কাজে লিপ্ত থাকায় শাহবাগ থানায় মামলা করা হবে।’
অভিযোগের ব্যাপারে সাজেদুর রহমানকে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে হোয়াটসঅ্যাপে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি আমি অপরাধী। আমি ভুয়া পরিচয় দিয়ে ভুল করেছি। এ জন্য ক্ষমা চাচ্ছি ও লজ্জিত। এটা নিয়ে সিনিয়রদের সঙ্গে আমার সমঝোতা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
এ বিষয়ে ঢাবির লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘এই ঘটনা সম্পর্কে অবগত নই। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে এমন কিছু শিক্ষার্থী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকে।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান জানান, ভুয়া পরিচয়ে কেউ জালিয়াতির করলে কিংবা কেউ জালিয়াতির শিকার হয়ে কর্তৃপক্ষকে জানালে অবশ্য তার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।