‘সৌহার্দ’ প্রকল্পে সক্ষমতা বাড়ছে সেবাদানকারীদের

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
০৪ জুন ২০২৪, ১১:২৪
শেয়ার :
‘সৌহার্দ’ প্রকল্পে সক্ষমতা বাড়ছে সেবাদানকারীদের

ইউএসএইড এর অর্থায়নে ও কেয়ার বাংলাদেশ বাস্তবায়িত স্ট্রেনথেনিং হাউজহোল্ড অ্যাবিলিটি টু রেসপন্ড টু ডেভেলপমেন্ট অপরচুনিটিস (সৌহার্দ্য) ৩ প্লাস অ্যাক্টিভিটি, স্থানীয় সেবাদানকারীদের (এলএসপি) গ্র্যাজুয়েশন (প্রশিক্ষণ উত্তীর্ণ) উদযাপনের জন্য ‘সেলিব্রেটিং অ্যান্ড লঞ্চিং লোকাল সার্ভিস প্রোভাইডারস নেটওয়ার্ক: সাপোর্টিং এ স্মার্ট বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

গতকাল সোমবার এই অনুষ্ঠানে ‘উদ্যোক্তা তৈরি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ এর প্রশিক্ষিত স্থানীয় সেবাদানকারীরা তাদের অভিজ্ঞতা ব্যাক্ত করেন। এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল স্থানীয় সেবাদানকারী ও বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা জোরদার করা।

সৌহার্দ্য প্রকল্প বেসরকারি খাতের সঙ্গে স্থানীয় সেবাদানকারীদের সম্পৃক্ততা জোরদার করতে কাজ করছে। এই প্রকল্প প্রায় ২ হাজার ৩০০ স্থানীয় সেবাদানকারীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে, যা প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার পরিবারের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে তাদের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।

এই প্রকল্প ৪৫০ জন স্থানীয় সেবাদানকারীর জন্য ‘উদ্যোক্তা তৈরি’ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে যেন তাদের দক্ষ উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা যায় এবং তাদের আয়মূলক কাজের পরিধি উন্মুক্ত করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, আমরা খুবই খুশি যে এলএসপিরা রোগ, সঠিক টিকা এবং চিকিৎসা সম্পর্কে জানে। তারাই সৌহার্দ্য দ্বারা আলোকিত মানুষ। তাদের পুষ্টির বিষয়ে আরও অবগত হওয়া উচিত, যাতে অন্যরা তাদের অনুসরণ করতে পারে।

কেয়ার বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর রাম দাস বলেন, সৌহার্দ্য প্রকল্পের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার দরিদ্র ও অতি দরিদ্র জনগণ তাদের জীবন-জীবিকার উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে। অনেক উপকারভোগী বিশেষ করে নারীরা বৈচিত্র্যময় কর্মসংস্থান, টেকসই কৃষি ও বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধির মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি করে আর্থিক অবস্থার উন্নতি করেছে।

উক্ত অনুষ্ঠানে সৌহার্দ্য প্রকল্প ‘স্থানীয় সেবাদানকারী নেটওয়ার্ক’ এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে, এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যা স্থানীয় সেবাদানকারীদের এক ছাতার নিচে নিয়ে আসবে। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সেবাদানকারীদের ভিজ্যুয়াল পরিচিতির জন্য ‘এলএসপি লোগো’ এর উন্মোচন করা হয়। উল্লেখ্য যে, এই লোগোটি গাইবান্ধার মমিনুল ইসলাম নামক একজন স্থানীয় সেবাদানকারী তৈরি করেছেন, তিনি প্রায় ৩৫০ জন স্থানীয় সেবাদানকারীর সাথে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। লোগো প্রতিযোগিতার বিজয়ী এবং দুই রানার্স-আপকে অনুষ্ঠানে চেক প্রদান করা হয়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে সৌহার্দ্য এক্টিভিটির চিফ অব পার্টি মার্ক নসবা বলেন, আমরা সবাই মিলে শুধু স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে অবদান রাখছি না বরং টেকসই উন্নয়ন ও সহনশীলতার পথও প্রশস্ত করছি। আসুন আমরা সকলের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে একসাথে কাজ করি।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সৌহার্দ্য ৩ প্লাস প্রকল্পের সিনিয়র টিম লিডার-প্রোগ্রাম, জনাব আব্দুল মান্নান মজুমদার। তার উপস্থাপনায় তিনি স্থানীয় সেবাদানকারীদের ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক বা এলএসপি বিজনেস নেটওয়ার্ক মডেলের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেন ও স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন।

বিশেষ অতিথি কেয়ার-এর আঞ্চলিক ডিরেক্টর রমেশ সিং তার ভাষণে বলেন, ‘আজ একটি ঐতিহাসিক দিন, কারণ আজ আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের স্থানীয় সেবাদানকারীরা সফলভাবে তাদের উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে। আমরা সাত ধরনের সেবাদানকারীর একটি নেটওয়ার্ক চালু করেছি যারা ভবিষ্যতে স্থানীয়ভাবে নেতৃত্ব দিয়ে কেয়ার বাংলাদেশের উন্নয়ন দৃষ্টিভঙ্গিকে নিয়ে যাবে।’

যেহেতু সৌহার্দ্য ৩ প্লাস প্রকল্প শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাই কেয়ার বাংলাদেশ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে আন্তর্জাতিক সংস্থা, ব্যাংক, কর্পোরেট সেক্টর এবং সরকারকে এই সম্প্রদায়ের উন্নতির অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন , সৈয়দ মো. নুরুল বাসির পরিচালক-প্রশাসন ও অর্থ, সমাজসেবা অধিদপ্তর, মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, পরিচালক, ফিল্ড সার্ভিস উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মো. ইকবাল মহসিন, পরিচালক, অর্থনৈতিক অন্তর্ভূক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, মো. রায়হান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ওয়ালটন প্লাজা সহ অন্যান্য সরকারি, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, কেয়ার বাংলাদেশের প্রতিনিধি, স্থানীয় সেবাদানকারী এবং অন্যান্য অংশগ্রহণকারীসহ ২৩০ জন।