‘কেউ আমাদের বাঁচাতে আসেনি’

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
২১ মে ২০২৪, ১৭:০১
শেয়ার :
‘কেউ আমাদের বাঁচাতে আসেনি’

প্রকাশ্যে ভোটের ভিডিও করতে গিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরায় মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইদ্রিস ফরাজীর কর্মী-সমর্থকের হামলায় ৬ সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে জাজিরা সেনেরচর ফরাজী দারুস সুন্নাহ নূরানী হাফেজিয়া কাওমীয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা কেন্দ্রে এ হামলা হয়। 

আহত সংবাদিকদের মধ্যে জাজিরা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি পলাশ খান, সহসভাপতি বরকত মোল্লা, দৈনিক কালবেলার ভেদরগঞ্জ প্রতিনিধি আশিকুর রহমান হৃদয়, সাংবাদিক সানজিদ মাহমুদ সুজন ও রুহুল আমিনের নাম জানা গেছে।

পুলিশ, স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ছিল আজ। এতে এসএম আমিনুল ইসলাম রতন (ঘোড়া প্রতীক) ও মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজীসহ (মোটরসাইকেল প্রতীক) পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কিছু সময় পর মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজীর কর্মী-সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রের কক্ষের কাপড় সরিয়ে প্রকাশ্যে ভোট দিচ্ছিলেন। তখন সাংবাদিকরা ভিডিও করতে গেলে ইদ্রিস ফরাজীর সমর্থক বিপ্লবসহ ২৫-৩০ জন কর্মী সাংবাদিক পলাশ, বরকত, হৃদয়, সুজন, রুহুল ও নুরুল আমিনদের ওপর হামলা করেন। এ সময় ছয় সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন।

হামলায় আহত সাংবাদিক আশিকুর রহমান হৃদয় বলেন, ‘আমরা ভোটকেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ জানতে পারি, ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করছেন মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকরা। পরে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক ভিডিও ধারণ করতে গেলে সবুজ শার্ট গায়ে বিপ্লব খা ও মোটরসাইকেলের ব্যাচ পরা এক যুবক আমাদের বাধা দেন এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। পরে আমার সঙ্গে থাকা অন্য সহকর্মীরা আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে গেলে মোটরসাইকেল প্রতীকের ভাই ইমন ফরাজীর নেতৃত্বে অনেক লোক এসে আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা পুলিশের থেকে সাহায্য চাইলে তারাও আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি।’

আহত আরেক সাংবাদিক বরকত মোল্লা বলেন, ‘আমাদের ওপর যখন হামলা চালানো হয়, আমরা প্রশাসনের কাছে হাতজোড় করে বাঁচাতে অনুরোধ করেছিলাম তারা তখন সরে যায়। কেউ আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। সাংবাদিক পরিচয়পত্র দেখলেই হামলাকারীরা মারধর করেছে।’

এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এখানে বেশ কয়েকজনকে আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। এ ছাড়া একজনের নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে, তার অবস্থার উন্নতি না হলে ঢাকায় পাঠানো হবে।’

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নি কর্মকর্তা ও জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকসহ কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছি। যারা আহত হয়েছেন, তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’