র‍্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু, ক্যাম্প কমান্ডারসহ ৪ জনকে প্রত্যাহার

অনলাইন ডেস্ক
২০ মে ২০২৪, ২২:২৭
শেয়ার :
র‍্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু, ক্যাম্প কমান্ডারসহ ৪ জনকে প্রত্যাহার

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে র‍্যাব হেফাজতে গৃহবধূ সুরাইয়া খাতুনের (৫২) মৃত্যুর ঘটনায় বাহিনীটির চারজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারা চারজনই র‍্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পে দায়িত্বরত ছিলেন। এদের মধ্যে গতকাল রবিবার কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মো. ফাহিম ফয়সালকে প্রত্যাহারের খবর জানা যায়। আজ সোমবার আরও তিনজনকে প্রত্যাহার করার কথা জানা গেল।

ফাহিম ফয়সাল ছাড়া প্রত্যাহার হওয়া অন্য তিনজন হলেন র‍্যাবের উপসহকারী পরিচালক ইকবাল হোসেন, করপোরাল মহিবুল ইসলাম ও কনস্টেবল মনির হোসেন।

ভৈরব ক্যাম্পের নতুন কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হাই চৌধুরী আজ সন্ধ্যায় চারজনকে প্রত্যাহার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, ময়মনসিংহের নান্দাইল মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই),  গৃহবধূ রেখা খাতুন (সুরাইয়ার পুত্রবধূ) হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাজমুল হাসানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে পুত্রবধূ হত্যা মামলার আসামি হিসেবে সুরাইয়া খাতুনকে আটক করে র‍্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পে নিয়ে আসে। পরদিন শুক্রবার সকালে তাকে মৃত অবস্থায় ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান র‍্যাব সদস্যরা। আটকের পর নির্যাতনের কারণেই সুরাইয়া খাতুনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করছে পরিবার। তবে র‍্যাবের দাবি, আটকের পর সুরাইয়া হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

 সুরাইয়া খাতুন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের বরুনাকান্দা গ্রামের আজিজুল ইসলামের স্ত্রী। যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূ রেখা আক্তারকে হত্যার অভিযোগে সুরাইয়া খাতুন, তার স্বামী আজিজুল ইসলাম এবং ছেলে তাইজুল ইসলাম লিমনকে আসামি করে ময়মনসিংহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ২ মে মামলা করেন রেখার মা রমিছা বেগম।

আদালতের নির্দেশে ১৩ মে নান্দাইল থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয় এবং এসআই নাজমুল হাসানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সুরাইয়ার পরিবার জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এসআই নাজমুল হাসান মোবাইল ফোন কল করে সুরাইয়া ও তার স্বামী আজিজুলকে থানায় ডেকে নেন। তাদের অনেকক্ষণ বসিয়ে রেখে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বিদায় করেন। এর পরপরই র‍্যাব সদস্যরা নান্দাইল থানার ফটক থেকে সুরাইয়া ও তার স্বামীকে আটক করে। পরে আজিজুলকে ছেড়ে দিয়ে সুরাইয়াকে ভৈরব ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।

র‍্যাব সদস্যরা শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুরাইয়া খাতুনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে যান বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ।

তবে র‍্যাবের দাবি, বুকে ব্যথা উঠলে তাদের মহিলা সেন্ট্রিকে সকাল ৬টায় সুরাইয়া বিষয়টি জানান। ১৫ মিনিটের মধ্যে তাকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় র‍্যাব।