ছেলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার না করতে শাজাহান খানকে চিঠি

মাদারীপুর প্রতিনিধি
০৭ মে ২০২৪, ১৭:৩১
শেয়ার :
ছেলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার না করতে শাজাহান খানকে চিঠি

মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আসিবুর রহমান খান ওরফে আসিব খানের পক্ষে (আনারস প্রতীক) নির্বাচনী প্রচার থেকে বিরত থাকতে তার বাবা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) শাজাহান খানকে চিঠি দিয়েছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। গত রবিবার বিকেলে মাদারীপুরের নতুন শহরে অবস্থিত শাজাহান খানের বাসভবনে এই চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার এ চিঠির বিষয়টি জানাজানি হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর-২ আসনের টানা ৮ বারের এমপি শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিব খান প্রথমবারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শাজাহান খানের চাচাতো ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেলুর রহমান শফিক খান (মোটরসাইকেল প্রতীক)।

নির্বাচনে এলাকায় থেকে কোনো সংসদ সদস্য প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না- নির্বাচন কমিশন এমন নীতিমালা থাকলেও ছেলের পক্ষে প্রচারণায় শাজাহান খান অংশ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে শফিক খান জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

 অভিযোগে বলা হয়, সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে শাজাহান খান ছেলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা ও বিভিন্ন কর্মসূচি অংশ নেন। গোপনেও ইউনিয়ন পর্যায়ে একাধিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। এ নিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এ ছাড়া চেয়ারম্যান প্রার্থী পা শফিক খান সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ১৫টিরও বেশি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। একটিরও কোনো ব্যবস্থা নেননি রিটার্নিং কর্মকর্তা। নির্বাচন কমিশনের এমন চুপ থাকাটা জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ। শাজাহান খানের লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে নির্বাচনের দিন ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করবে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। এতে সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ জন্য প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা কামনা করছি।’

নির্বাচনের ব্যাপারে আসিব খান বলেন, ‘নির্বাচনের দিন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন শফিক খান। বিভিন্ন মানুষের মধ্যে টাকা ছড়াচ্ছে, বহিরাগতদের দিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এর কারণ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেনে গেছেন, তিনি বিজয়ী হতে পারবেন না।’

ছেলের হয়ে নির্বাচনী প্রচার করার বিষয়টি অস্বীকার করে শাজাহান খান বলেন, ‘আমি মাদারীপুরে যখন থাকি, তখন স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে কথাবার্তা বলি। এর বাইরে অন্য কিছু না। যারা অভিযোগ দিচ্ছে, তারা ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য এ কাজ করছে।’

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আহম্মেদ আলী বলেন, ‘শফিক খানের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই শাজাহান খানকে চিঠি দেওেয়া হয়েছে। তাকে নির্বাচনী কোনো কার্যক্রমে অংশ না নিতে বলা হয়েছে।’ 

উল্লেখ, আগামীকাল বুধবার প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।