দম ফেলার সময় নেই মিস্ত্রিদের
দিনের প্রবল দহনের রেশ রাতেও কাটছে না। গুমোট পরিবেশে গরম ছড়াচ্ছে পাখার হাওয়া। এজন্য বেড়েছে এসির চাহিদা। সঙ্গে বেড়েছে এসি মেকানিকদের ব্যস্ততাও। দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। দিন-রাত এক করে কাজ করেও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না তারা।
ঢাকার মোহাম্মদপুর শ্যামলী এলাকার বাসিন্দা রাশেদ সরকার এসি চালিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ বিভ্রাট দেখা দেয়। শেষ রাতে তার ঘুম ভাঙে তীব্র পোড়া গন্ধে। বুঝতে পারেন, ধোঁয়া উড়ছে। দম বন্ধ করা অবস্থা। অন্ধকার ঘরে কোনো মতে হাতড়ে এসির সুইচ বন্ধ করলেও আতঙ্কে আর ঘুম আসেনি। সকালে তড়িঘড়ি শুরু করেন মিস্ত্রির খোঁজ। এসি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে মিস্ত্রির খোঁজ করায় সাফ জানানো হয়, এক সপ্তাহের আগে কাউকে পাঠানো সম্ভব নয়! তাড়া থাকলে অন্য মিস্ত্রিকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তি। মাথায় হাত পড়ে রাশেদ সরকারের।
তীব্র গরমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বিকল হয়ে পড়লে এমন বিভ্রাটে পড়ছেন অনেকে। রক্ষণাবেক্ষণের কর্মীর দেখা না পাওয়ায় গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠছে। আর তা কমাতে এসি সারানো পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ব্যস্ততা বেড়েছে। ঢাকা শহর থেকে শহরতলি, সর্বত্র গরমে পাল্লা দিয়ে এসি, কুলার, এমনকি সিলিং পাখাও খারাপ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ আসছে। আর তা সারাতে ঘাম ছুটছে কর্মীদের। এসি বা কুলার সারাতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিতে ফোন করলে কোথাও অন্তত দিন দশেক সময় চাওয়া হচ্ছে, কোথাও আবার ‘ফোন করে খবর নেওয়া হবে’ বলে দায় সারছেন ফোনের ওপারে থাকা কর্মী। জরুরি ভিত্তিতে এলাকার মিস্ত্রির খোঁজ করলেও শুনতে হচ্ছে, ‘এখন অনেক চাপ! প্রতিদিন মধ্যরাতে বাড়ি ফিরছি। দিন চারেকের আগে পারব বলে মনে হচ্ছে না।’ চাহিদা বুঝে বহু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা দাবি করার অভিযোগও উঠছে।
আরও পড়ুন:
এই গরমে এসি ছাড়াই ঘর ঠাণ্ডা রাখার কৌশল
খুচরা পর্যায়ে ও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমের কর্মকর্তারা জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এখন এসি বিক্রি তিনগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। অনেক ব্রাঞ্চে এসি স্টক আউট। বাসাবাড়িতে এসি ফিটিং করে দিয়ে আসতে সময় নেওয়া হচ্ছে ৫/৭ দিন পর্যন্ত। নতুন এসি কেনার পর নাম-ঠিকানা রেখে দেওয়া হচ্ছে। ফিটিং মিস্ত্রির শিডিউল পাওয়ার পর লাগছে এসি।
মোহাম্মদপুর হোলসেল ইলেকট্রনিক্সের স্বত্বাধিকারী শাখওয়াত হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, এসির চাহিদা এতো বেশি যে, সে তুলনায় আমরা ইন্সটল করে দিতে পারছি না। ফলে ক্রেতাদের ৫/৭ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
বেড়েছে এসি-ফ্যানের ক্রেতা