জামায়াত নেতার অনুষ্ঠানে ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ নেতা

উল্লাপাড়া প্রতিনিধি
১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৩৭
শেয়ার :
জামায়াত নেতার অনুষ্ঠানে ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ নেতা

ঈদের দিন জোহর নামাজের পর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় প্রায় শতাধিক মামলার আসামি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের বাড়িতে ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়। 

ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নবী নেওয়াজ খান বিনু। একপর্যায়ে সেখানে নিজের জন্য ভোটও চান তিনি।  

এদিকে জামায়াত নেতার অনুষ্ঠানে গিয়ে ভোট চাওয়ার ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে প্রকাশের কিছুক্ষণের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. মকলেছুর রহমান ডাবলু বলেন, ‘গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য নবী নেওয়াজ খান বিনু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি নিজে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি কীভাবে প্রায় শতাধিক মামলার আসামি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মওলানা রফিকুল ইসলাম খানের সঙ্গে তার বাড়িতে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনীর অনুষ্ঠানে যোগদান করে বক্তব্য দেন?’ 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, ‘গত ১০ বছরে রফিকুল ইসলাম খান প্রকাশ্যে এসে এলাকায় সভা সমাবেশ করতে পারেনি। কিন্তু এখন উল্লাপাড়া উপজেলা শাখার নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনীর অনুষ্ঠান করছেন। বিষয়টি সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। এ জন্য নবী নেওয়াজ খান বিনুর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’ 

সলপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শওকত ওসমান বলেন, ‘বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নবী নেওয়াজ খান বিনুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’ 

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা নবী নেওয়াজ খান বিনুর বলেন, ‘সম্পর্কে একই বংশের চাচা-ভাতিজা হওয়ায় ঈদের দিন জোহর নামাজের পর পারিবারিকভাবে বাড়ির কাচারি ঘরের বারান্দায় আলাপচারিতায় একপর্যায়ে অনেক লোকের উপস্থিতি ঘটে। যেহেতু রফিকুল ইসলাম খান জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা, তাই তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। আর আমি আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করব বলে বক্তব্য দিয়ে ভোট চেয়েছি। কিছু কুচক্রী মহল আমাকে হেও প্রতিপন্ন করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার বক্তব্য ছড়িয়ে দিয়েছে।’ 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ফয়সাল কাদের রুমি বলেন, ‘যেহেতু এটা কোনো দলীয় নির্বাচন নয়, সেহেতু যেকেউ প্রার্থী হতে পারেন এবং যেকোনো ফোরামে বক্তব্য দিতে এবং ভোট চাইতে পারেন। এতে দোষের কিছু নেই।’