ন্যাচারাল ল্যাগুয়েজ প্রসেসিং প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ইউআইইউর ‘অ্যাপোক্যালিপস’
ভাষা শহীদ ও তাদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ভাষার মাসজুড়ে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হলো ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং (এনএলপি) প্রতিযোগিতা। ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কম্পিউটার ক্লাবের (ইউআইইউ সিসিএল) উদ্যোগে এবং বেঙ্গলী এআই’র সহযোগিতায় ‘ভাষামূল: মুখের খোঁজে’ শীর্ষক এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। গত শনিবার ইউআইইউ ক্যাম্পাসে এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইউআইইউর টিম ‘অ্যাপোক্যালিপস’। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম কিতা করিস এবং তৃতীয় হয়েছে বুয়েটের টিম ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ড। চ্যাম্পিয়ন টিমকে ৫০ হাজার, দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারীকে ৩০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় স্থান অর্জনকরীকে ২০ হাজার টাকার প্রাইজমানি দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, ছাত্রছাত্রী ও বিশিষ্ট অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউআইইউ’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’ - কিংবদন্তী গীতিকার আবদুল লতিফের গানের এই পংক্তিটি স্লোগান রূপে সেদিন মুখরিত করেছিল ঢাকার থমথমে পরিবেশ। মাতৃভাষায় কথা বলতে পারার অধিকার চাইতে সেদিনই প্রথম কোনো জাতি সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল। ঢাকার পিচঢালা রাস্তা রঞ্জিত হয়েছিল শহীদের রক্তে। ভাষা শহীদদের এই ত্যাগ যেন বারংবার মনে করিয়ে দেয়, মায়ের ভাষার তাৎপর্য ঠিক কতটা।
এরই চেতনায় ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং (ঘখচ) প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। যার মূল লক্ষ্য এমন একটি প্রযুক্তি তৈরি করা যেটি বাংলদেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক উপভাষার সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর বিষয়গুলোকে বিবেচনায় এনে তা আন্তর্জাতিক ফনেটিক এলফাবেটে রূপান্তরের সক্ষমতা রাখবে।
জাতীয় ডাটাথন প্রতিযোগিতাটি ৮-২৮ ফেব্রুয়ারি অবধি চলমান ছিল, যেখানে প্রতিযোগী দলগুলোকে কিছু নির্ধারিত নিয়ম মেনে এমন একটি প্রযুক্তি বা মডেল তৈরি করতে হবে যা বাংলা যেকোনো আঞ্চলিক উপভাষার ধ্বনি, বলার ভঙ্গি, স্বর, প্রভৃতি বিষয়গুলোকে বুঝতে পারবে এবং সেই অনুযায়ী ভাষাটিকে ইন্টারন্যাশনাল ফনেটিক এলফাবেটে রূপান্তর করতে পারবে। এটি করার মূল উদ্দেশ্যই হলো এমন একটি এআই প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষকে পরিচয় করানো যা সর্বস্তরের বাংলা ভাষাভাষীর জন্য ব্যবহার করতে সহজ হবে।
প্রতিযোগিতায় মূলত ছয়টি জেলার টাঙ্গাইল, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম, নড়াইল ও রংপুর আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে কাজ করা হয় এবং দেশের প্রায় ৩০টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ১০০টি দল অংশগ্রহণ করে। এক মাসব্যাপী প্রতিযোগিতাটির চূড়ান্ত পর্বের জন্য শীর্ষ ২৫ টি দল নির্বাচিত হয়।
ফাইনাল রাউন্ড মার্চের ১ ও ২ তারিখে ইউআইইউ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত পর্বে প্রতিযোগীরা তাদের বানানো সিস্টেম/মডেল বিচারকদের সামনে উপস্থাপন করে।