ঢাবির প্রশ্নফাঁসের দাবি করা চক্রের প্রধান গ্রেপ্তার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন ফাঁসের গুজব রটনাকারী চক্রের প্রধান আহমেদ নিলয়কে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ রবিবার ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং ‘কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট’-এর ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গতকাল শনিবার ঢাকা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক মেসেজে প্রশ্নফাঁস প্রতারণার আসামিকে গ্রেপ্তারের কথা তাকে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, প্রশ্ন ফাঁসকারী এই চক্রের প্রধান হলেন আহমেদ নিলয় (টেলিগ্রাম প্রোফাইলে দেওয়া) নামে এক ব্যক্তি। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে। মূলত টেলিগ্রাম ও ফেসবুকের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়াই ছিল এ চক্রের কাজ। এক বা একাধিক একাউন্ট খুলে তারা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য ফাঁদ পাততেন। ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে আশ্বাস দিতেন পরীক্ষার আগেই শতভাগ কমন প্রশ্ন বুঝিয়ে দেওয়ার। সে ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা দিতে হয় পরীক্ষার আগে এবং বাকী ৩০ হাজার টাকা পরীক্ষা শেষে।
আরও জানা যায়, চাহিদা কম থাকলে দু হাজার টাকাতেও নেমে আসে প্রশ্নের দাম। এরপর টাকা দিলেই একাউন্ট বন্ধ করে চক্রটি হয়ে যেত লাপাত্তা। ঢাবির ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ‘কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট’-এর ভর্তি পরীক্ষার আগে অস্তিত্ব পাওয়া যায় এই চক্রটির। অনলাইনেই করত এসব প্রতারণা। গত বৃহস্পতিবার ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন ফাঁস করে বিক্রির জন্য টেলিগ্রামে গোপনে কাজ করছিল আহমেদ নিলয়ের নেতৃত্বাধীন এই চক্রটি।
অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানোর সকল ব্যবস্থাই খুব সতর্কতার সঙ্গে গ্রহণ করা হয়। প্রশ্ন ফাঁসের এ সব তৎপরতার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়া হয়। শিক্ষার পরিবেশকে নষ্ট করার পায়তারা করা হয়। এই ধরনের প্রতারণা বা গুজব ছড়িয়ে যারা বিভিন্নভাবে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া অপরাধীকে চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনায় পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘চক্রের প্রধান যে গ্রেপ্তার হয়েছে এটা অবশ্যই আমাদের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক সংবাদ। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে যদি আমরা নেতিবাচক বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে একটা আন্দোলন গড়ে তুলি তাহলে সমাজ থেকে অনেক খারাপ জিনিস দূর হবে। সমাজটা আরও সুন্দর হবে।’